গোবিন্দ রায়: দুর্নীতির অভিযোগের কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি মামলাকারীরা। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির সংক্রান্ত ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় ফের আরও একবার মামলা খারিজের পক্ষে সওয়াল করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। দাবি, তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইও তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারেনি। তৃণমূল সাংসদ তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষাদপ্তরের পক্ষে সওয়াল করেন ৷ তিনি বলেন, "২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া যখন হয়, সেই সময় প্রশিক্ষণহীনদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অনুমতি ছিল। বলা হয়েছিল নিয়োগ হওয়ার পর, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে। চাকরি পাওয়ার পর তাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিয়েছেন।"
সিবিআই-এর তদন্ত নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, "সিবিআই একজন প্রার্থীকেও দেখাতে পেরেছে, যিনি টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন? দুর্নীতি করে সিবিআইকে তদন্ত দেওয়া হল ৷ সিবিআই গত পাঁচ বছর ধরে তদন্ত শেষ করতে পারল না ?" যদিও এদিন মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "এটা একটি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানিকে ওএমআর শিট তৈরি করা, মূল্যায়ন করা, চূড়ান্ত প্যানেল তৈরি করা-সহ একাধিক কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, নিয়োগের জন্য সিলেকশন কমিটি তৈরি করা হয়েছিল কোন রুলে? রাজ্যের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কিনা, তার কোনও নথি কমিশন দেখাতে পারেনি।" বুধবার সব পক্ষের বক্তব্য শুনে মামলার শুনানি শেষে রায় দান স্থগিত রাখল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর প্রাথমিকের ৩২ হাজার কর্মরত শিক্ষকও উদ্বিগ্ন। হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার পর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও কর্মরত শিক্ষকরা। হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের চাকরি বাতিলের নির্দেশ স্থগিতাদেশ দেয়। তবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে প্রার্থীদের চাকরি বজায় রেখেই নতুন করে ইন্টারভিউ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তিন মাসের মধ্যে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে ফের হাই কোর্টে আসে ৷ গত ২৮ এপ্রিল থেকে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল। টানা ছ'মাস ধরে শুনানি শেষে বুধবার রায়দান স্থগিত রাখে আদালত।
