Advertisement
বিলুপ্তির দরজা থেকে জীবনে! ছবিতে ছবিতে সাইবেরিয়ার বাঘেদের ফিরে আসার গল্প
একসময় বাঘেদের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছিল ৩০!
ভয়ংকর-সুন্দর! জঙ্গলের অহঙ্কার হলদে-কালো ডোরাকাটা। কিন্তু এমন বাঘ মানেই কেবল সুন্দরবন। রাশিয়ার সাইবেরিয়ায় দেখা মেলে সাইবেরিয়ান বাঘের। তাদেরও চেহারা বাংলার বাঘেদের মতোই। কিন্তু তফাতও আছে। সাইবেরিয়ান টাইগারের দৈর্ঘ্য অনেক বেশি। আরও কিছু পার্থক্যও আছে। তবে একটা মিল প্রবল। আজকের পৃথিবীতে দুই ভিন্ন মুলুকের বন্যপ্রাণই বিপণ্ণ। যেমন আমাদের দেশে বাঘকে বাঁচানোর দিকে নজর দেওয়া হয়েছে, একই ছবি সাইবেরিয়াতেও। কিন্তু বহু প্রচেষ্টার সংখ্যায় বেড়েছে সাইবেরিয়ান বাঘেরা। এ এক অসামান্য সাফল্য। ছবি: ডেল মিকুয়েল
উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে যেখানে সাইবেরিয়ান বাঘ তথা আমুুর টাইগারের সংখ্যা ছিল ৩ হাজারেরও বেশি, সেখানে ১৯৩০ নাগাদ তা কমে গিয়ে দাঁড়ায় মাত্র ৩০টিতে! তবে বিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ফের সংখ্যায় বাড়তে থাকে এখানকার বাঘেরা। এরপর ফের ১৯৯১ সালে সোভিয়েতের পতন ও লাগাতার চোরাশিকারের ধাক্কায় বিপণ্ণ হয়ে পড়ে তারা। আর এখান থেকেই শুরু হয় নয়া লড়াই।
সাইবেরিয়ান ব্যাঘ্র্য প্রকল্পই হয়ে ওঠে বাঘেদের সংখ্যাবৃদ্ধিতে এক জরুরি চাবিকাঠি। অথচ কাজটা ছিল কঠিন। বাঘ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গলায় রেডিও কলার পরানো খুব জরুরি পদক্ষেপ। কিন্তু আমেরিকায় সেই সময় এর অহরহ ব্যবহার থাকলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজ্ঞানীদের তা অজানাই ছিল। শেষে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় মার্কিন মুলুকই। দুই দেশের বিজ্ঞানী-গবেষকরা মিলে কাজ শুরু করেন। দ্রুত ১১৪টি বাঘের গলায় রেডিও কলার পরানো সম্ভব হয়। ছবি: ডেল মিকুয়েল
এতেই মেলে সাফল্য। ২০২২ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলে বসেন, ২০১০ সাল থেকে 'প্রাপ্তবয়স্ক' বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ৩৯০টি থেকে তা বেড়ে ৭৫০টি হয়েছে। যদিও এই সংখ্যায় সিলমোহর দেয়নি 'ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন'। কিন্তু তারা জানায় সংখ্যাটা খুব কম নয়। ২৬৫ থেকে ৪৮৬-র মধ্যেই রয়েছে সংখ্যাটা। পরবর্তী সময়েও তা বেড়েছে।ছবি: ইউরি স্মিথইউক
সম্প্রতি একটি বই প্রকাশিত হয়েছে তিরিশ বছরের এই সংরক্ষণ অভিযান নিয়ে। বইটির নাম 'টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স'। লেখক বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ জোনাথন স্লাট। ৫১২ পাতার বই জুড়ে বিশ্বের দীর্ঘতম ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের খুঁটিনাটি জানানো হয়েছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে বাঘিনী ওলগাকে। কলার বদলানোর পর তাকে খুব বেশিবার অবশ্য দেখা যায়নি। হেলিকপ্টার থেকে তোলা ছবিতে তার আংশিক শরীর দেখা গেলেও বিজ্ঞানীরা নির্ভুল চিনে নিয়েছেন ওলগাকে।ছবি: ডেল মিকুয়েল
জোনাথন স্লাট তাঁর বইয়ে পরিষ্কার লিখেছেন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা যে শেষ, তা কিন্তু নয়। তাঁর কলমে ফুটে উঠেছে সতর্কতার বার্তা- 'এটা সংরক্ষণের এক সাফল্যের গল্প। তবে সতর্কতা এরপরও প্রয়োজন। এই বাঘেরা বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্ত থেকে সবেমাত্র হামাগুড়ি দিয়ে ফিরে এসেছে। যাতে আবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় সেজন্য এদের ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।' ছবি: ইউরি স্মিথইউক
Published By: Biswadip DeyPosted: 06:52 PM Dec 05, 2025Updated: 07:30 PM Dec 05, 2025
Sangbad Pratidin News App
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
