shono
Advertisement

Breaking News

Sishusathi

হার্টে ফুটো, ২ অলিন্দের মাঝে ছিল না দেওয়াল! রাজ্যের 'শিশুসাথী' প্রকল্প প্রাণ বাঁচাল খুদের

চিকিৎসকদের কথায়, দশ বছরের নিচে যত শিশু হার্টের অসুখে আক্রান্ত হয় তার মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা যায় বড়জোর এক শতাংশের।
Published By: Tiyasha SarkarPosted: 12:56 PM Nov 04, 2024Updated: 12:56 PM Nov 04, 2024

অভিরূপ দাস: হার্টে ফুটো। দুটো অলিন্দের মাঝে কোনও দেওয়াল নেই। গুরুতর অসুখে আক্রান্ত ন’বছরের শিশু মামণি দাস। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ কয়েক লক্ষ টাকা। সামান‌্য সরষে খেতে চাষের কাজ করা মামণির বাবা প্রভাসকুমার দাসের পক্ষে সে টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। মুশকিল আসান করল মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের শিশুসাথী স্কিম। সরকারি সাহায্যে আর জি কর মেডিক‌্যাল কলেজের সিটিভিএস বিভাগ নতুন জীবন দিল একরত্তিকে।

Advertisement

অসুবিধা কী ছিল? মামণির মা বৈশাখী দাস জানিয়েছেন, প্রবল শ্বাসকষ্ট ছিল নিত‌্যসঙ্গী। জ্বর এলে ছাড়ার নাম করত না। বর্ধমানের কেতুগ্রামের মামণি দাসকে নিয়ে প্রায়ই যমে মানুষে টানাটানি। সম্প্রতি অবস্থা বাড়াবাড়ি হওয়ায় শিশুটিকে নিয়ে আর জি কর মেডিক‌্যাল কলেজে আসে পরিবারটি। ভর্তি করা হয় বিভাগীয় প্রধান ডা. রাজর্ষি বসুর অধীনে। কার্ডিও থোরাসিক ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. রাজর্ষি বসু জানিয়েছেন, অত‌্যন্ত বিরল এই হার্টের অসুখ। চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম কমন অ‌্যাট্রিয়াম অথবা অ‌্যাট্রিওভেন্ট্রিকুলার সেপটাল ডিফেক্ট। দশ বছরের নিচে যত শিশু হার্টের সমস‌্যায় আক্রান্ত হয় তার মধ্যে এই ধরনের সমস‌্যা দেখা যায় বড়জোর এক শতাংশের মধ্যে।

টানা পাঁচ ঘণ্টার ম‌্যারাথন অস্ত্রোপচারের পর আপাতত বিপন্মুক্ত ওই শিশু। ডা. রাজর্ষি বসু জানিয়েছেন, ‘‘প্রথমে অপারেশন টেবিলে ইকো করে আমরা দেখতে পাই ঠিক কী ধরনের সমস‌্যা। এরপর ধাপে ধাপে এগোই। শিশুটির দুটো অলিন্দের মাঝে কোনও দেওয়াল ছিল না। দুটো অলিন্দ এক হয়ে একটা অলিন্দ হয়ে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারে যেমন কমন অ‌্যাট্রিয়ামের মেরামত করা হয়েছে তেমনই মাইথ্রাল ভালভের মেরামত করা হয়েছে। এত ছোট বয়সে মাইথ্রাল ভালভ বদল করা যায় না। স্বাভাবিকভাবেই অস্ত্রোপচারের মাধ‌্যমে তা মেরামত করতে হয়েছে।’’

টানা পাঁচ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে ডা. রাজর্ষি বসুকে সহায়তা করেছেন ডা. ভাস্কর দাস, ডা. সুমন চট্টোপাধ‌্যায়। অ‌্যানাস্থেশিয়ার দায়িত্বে ছিলেন ডা. লিনি শ্রীবাস্তব। চিকিৎসকের কথায়, ‘‘অস্ত্রোপচার করার পরেই আমরা ফের একবার ইকো করে দেখে নিয়েছি, হার্ট এখন একদম চাঙ্গা। কাজ করছে ঠিকমতো।’’ মামণির মা বৈশাখী দাসের কথায়, ‘‘মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে, তার জন‌্য ধন‌্যবাদ চিকিৎসকদের, অসংখ‌্য ধন‌্যবাদ মুখ‌্যমন্ত্রীকেও।’’ ২০১৩ সালের রাজ্যের শিশুসাথী প্রকল্প চালু করেন মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়। যেসব শিশুদের হার্টে সমস‌্যা, তাদের এই প্রকল্পের মাধ‌্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হয়। প্রকল্পের সুযোগ নেওয়ার শর্ত একটাই। শিশুর অভিভাবকের ভোটার কার্ড থাকা বাধ‌্যতামূলক। শিশুর পরিবারকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের শিশুসাথী যোজনা বিভাগে আবেদন করলেই সব খতিয়ে দেখে মেলে সুবিধা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • হার্টে ফুটো। দুটো অলিন্দের মাঝে কোনও দেওয়াল নেই। গুরুতর অসুখে আক্রান্ত ন’বছরের শিশু মামণি দাস।
  • বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ কয়েক লক্ষ টাকা। সামান‌্য সরষে খেতে চাষের কাজ করা মামণির বাবা প্রভাসকুমার দাসের পক্ষে সে টাকা জোগাড় করা অসম্ভব।
  • মুশকিল আসান করল মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের শিশুসাথী স্কিম।
Advertisement