রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পঞ্চায়েত ভোটে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় নিচুস্তরে সংগঠনের রদবদল করতে গিয়েও বিক্ষোভের জেরে নাজেহাল বঙ্গ বিজেপি। একাধিক মণ্ডল সভাপতি বদল করায় বিক্ষোভ যেভাবে দানা বাঁধছে তাতে পরিস্থিতি সামলানো যাবে কি না শঙ্কায় গেরুয়া শিবির। লোকসভার আগে ফের নিচুতলায় বড় অংশ নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে বলে দলের কাছে খবর এসেছে। ফলে পঞ্চায়েত ভোটে বিপর্যয়ের জন্য নিচুতলার ঘাড়ে দায় চাপিয়ে রদবদলের কাজ কার্যত বুমেরাং হতে চলেছে রাজ্য বিজেপি নেতাদের কাছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নিচুতলার ক্ষোভ প্রশমনে রাজ্য নেতাদের হস্তক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, দলীয় সূত্রে এমনই খবর।
পঞ্চায়েত ভোটে খারাপ ফলের পর নিচুতলায় রদবদল করতে গিয়ে দলের গোষ্ঠীকোন্দল চরম আকার নিয়েছে। বিক্ষোভের আঁচ কলকাতায় বঙ্গ বিজেপির রাজ্যদপ্তর পর্যন্ত চলে আসতে পারে। ইতিমধ্যেই জেলা পার্টি অফিসগুলিতে পদ থেকে সরানো মণ্ডল সভাপতি ও তাঁর অনুগামীদের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে রদবদল করতে গিয়ে নতুন করে ফ্যাসাদে পড়েছেন রাজ্য নেতারা। আর পদ থেকে বাদ পড়ারা ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে। হুগলি জেলায় ২৩টি মণ্ডলের সভাপতি বদলের পর জেলাজুড়ে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি: চাপ দিয়ে মিথ্যে বলাচ্ছে ইডি! প্রমাণ খামবন্দি করে আদালতে হাজির কুন্তল ঘোষ]
অভিযোগ, নিচুতলায় আলোচনা না করেই রাজ্য থেকে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে পদ থেকে সরানো হয়েছে। দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলায় ৯ জন মণ্ডল সভাপতি বদলের পরই গোষ্ঠীকোন্দল চরমে উঠেছে। জেলা পার্টি অফিসে বিক্ষোভও হয়েছে। আবার হাওড়া গ্রামীণ জেলায় মণ্ডলস্তরে রদবদল নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চরমে উঠেছে। হাওড়া গ্রামীণ জেলায় ১৬ জন মণ্ডল সভাপতিকে বদল করা হয়েছে। এরপরই জেলা কার্যালয়ে বিক্ষোভ থেকে ধাক্কাধাক্কি চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য নেতৃত্বকে যেতে হয় গ্রামীণ জেলায় বৈঠক করতে। ১০ আগস্টের মধ্যে মণ্ডল কমিটির সম্মেলন আদৌ করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দানা বেঁধেছে।
লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই হচ্ছে সাংগঠনিক রদবদল। আর ১৩০০-র মতো মণ্ডল কমিটির মধ্যে আড়াইশোর বেশি মণ্ডল সভাপতি বদল করা হবে। সেই প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু বিক্ষোভ যেভাবে চরমে উঠেছে তাতে লোকসভা নির্বাচনের আগে নতুন করে ভাবাচ্ছে রাজ্য নেতাদের। পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল না হওয়ার দায় কেন নিচুতলার উপর চাপানো হচ্ছে, প্রশ্ন উঠেছে গেরুয়া শিবিরে। তাদের প্রশ্ন, কেন রাজ্য নেতারা দায় নেবেন না? যদি মণ্ডল সভাপতিদের উপর সব দায় চাপিয়ে তাদের ছেঁটে ফেলা হয় পদ থেকে তাহলে নিচুতলায় দলের বড় অংশই নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ছেঁটে ফেলা মণ্ডল সভাপতি ও তাঁদের অনুগামীদের বিক্ষোভে কার্যত প্রমাদ গুনছেন বঙ্গ বিজেপি নেতারা।