ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রের উন্নয়ন সদা তৎপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সাল রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে শিল্পের বিকাশও হয়েছে। ছোট-বড় নানা শিল্প গড়ে উঠেছে। তবে শিল্প স্থাপনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিলম্বের কারণ হয়ে ওঠে রাজ্য সরকারের বর্তমান জমি নীতি। এবার সেই নীতি বদলের পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। বুধবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বর্তমান জমি নীতি নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেই ভাবনার কথা বললেন। সেইসঙ্গে পুরনো একটি নীতি প্রত্যাহার করা হল।

বুধবার বিধানসভায় ছিল স্বাস্থ্য বাজেট আলোচনায় অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, ''১৯৫৭ সালে সরকার একটা জমি নিয়েছিল, আজও তার ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। সিপিএম আমলে এত জমি নিয়েছে, তার টাকা আজও দিতে হচ্ছে। ট্রেজারিতে চাপ বাড়ছে। এটা হবে না। একটা দায়িত্ব নেয়নি। এখন রাজ্যে বড় শিল্প আসছে। আরও প্রকল্প আছে। 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার' আছে। আইটি এজেন্সি অনেক বেড়েছে, তাই নতুন পলিসি করতে হবে।''
২০-২৫ বছর আগে রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামোর তুলনায় এখন অনেকটাই বদল হয়েছে। সেকথা মাথায় রেখেই রাজ্যের নয়া জমি-নীতির ভাবনা সরকারের। আর্থিক পরিস্থিতি দেখে নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে বলে এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ''পুরনো বিল রিপিল করে রাজ্যপালের কাছে পাঠাব। তাঁর কাছে আবেদন রইল, এক মাসের মধ্যে ছেড়ে দিলে আমরা নতুন পলিসি নিয়ে আসব।'' মুখ্যমন্ত্রী জানান, মুখ্যসচিবকে শীর্ষ দায়িত্বে রেখে কমিটি তৈরি হয়েছে। অংশীদাররাও থাকবে। নতুন নীতি আসবে। নতুন প্রকল্প আনা সহজ হবে। এনিয়েও অবশ্য কেন্দ্রকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানকার কয়লাখনি কেন্দ্রের অধীন। তা নিয়েও কেন্দ্রকে নীতি তৈরির কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু তা হয়নি বলে অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বীরভূমে দেউচা পাচামিতে কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরুর জন্য আশপাশের বহু জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। তা নিয়ে সাময়িকভাবে স্থানীয়দের ক্ষোভ তৈরি হলেও রাজ্য সরকারের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, চাকরি দেওয়ায় তা প্রশমিত হয়ে মসৃণভাবে কাজ শুরু হয়। এরপরই রাজ্যের জমি নীতি বদলের পরিকল্পনার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।