নব্য়েন্দু হাজরা: চালকের অভাব। অথচ বেড়ে চলেছে একের পর এক মেট্রোরুট। তাই পরিষেবা দিতে সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে অপারেটর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছিল, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পাঁচ বছরের মেয়াদে ট্রেন অপারেটর নিয়োগ হবে। এই মর্মে টেন্ডার ডেকে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। যা নিয়ে শোরগোল শুরু হয় মেট্রোর অন্দরে। বিভিন্ন সংগঠনও প্রতিবাদ করে। আর তারপরই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হল এই অপারেটর নিয়োগের টেন্ডার প্রত্যাহার করা হল।

কলকাতা মেট্রোয় ক্রমশ বাড়ছে চালকের সংকট। চলতি মাসের শেষে অন্তত ১৩ জন মোটরম্যান বা মেট্রোচালকের অবসর নেওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা মেট্রোয় উত্তর-দক্ষিণ, ইস্ট-ওয়েস্ট, জোকা-মাঝেরহাট এবং নিউ গড়িয়া-রুবি পথে পরিষেবা চালু রয়েছে। এ ছাড়াও পরিষেবা শুরু হতে পারে নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর পথে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত পথও চলতি বছরেই জুড়ে যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পথে মেট্রো ছুটবে। সংশ্লিষ্ট পথগুলিতে মেট্রো চলাচল শুরু হলে চালকের চাহিদা আরও বাড়বে। কিন্তু আকাল চালকেরই। দক্ষিণ-পূর্ব রেল থেকে ২৫ জন চালককে আনতে পেরেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আপাতত তাঁদের প্রশিক্ষণ চলছে। সেই সঙ্গে মেট্রোর ইয়ার্ডে ট্রেন শান্টিংয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কয়েক জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে চালক হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। তবে, তাতেও সমস্যা মিটবে না। আর তাই এই অপারেটর নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, নতুন রুটগুলোয় রেডিও-সঙ্কেত নির্ভর ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় চালকের ভূমিকা গৌণ হবে। এই ব্যবস্থায় ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয় স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিতে। ফলে, চালকের সেই অর্থে দায়িত্ব থাকবে না। চালকের পরিবর্তে তাঁরা ভবিষ্যতে ট্রেন অপারেটর কাম স্টেশন কন্ট্রোলার পদে কর্মী নিয়োগ করতে চান। এই আবহে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পাওয়া চুক্তিভিত্তিক ট্রেন অপারেটরদের দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালানোর কথা ভাবা হয়েছিল। মেট্রোর প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা বিকল হলে ট্রেন অপারেটররা সাধারণ ব্যবস্থায় কীভাবে ট্রেন চালাবেন! আমরা এই প্রশ্ন আগেই তুলেছিল।’’