shono
Advertisement
CPIM Brigade Rally

লাও তো বটে, কিন্তু আনে কে! বন্যার ডাক, সেলিমের হুঙ্কার, ব্রিগেডে 'শূন্য' সিপিএম দিশা পেল কি?

ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে ব্রিগেড যেন অন্তঃসার শূন্যই!
Published By: Sayani SenPosted: 05:54 PM Apr 20, 2025Updated: 08:50 PM Apr 20, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাগাতার হার। আর তাতেই ক্রমশ হতাশ লাল শিবির। আগামী বছর আবার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। শূন্যের গেরো থেকে মিলবে মুক্তি? কীভাবে হবে শাপমোচন? রবিবাসরীয় দুপুরের  ব্রিগেড (Brigade) সমাবেশ থেকে হয়তো দলীয় কর্মী-সমর্থকরা সেই দিশা পাবেন বলে আশা ছিল।  'ওজনদার' বক্তা মহম্মদ সেলিম থেকে 'আগুনখেকো' নেত্রী বন্যা টুড়ু পর্যন্ত হুঙ্কার দিয়েছেন, "লড়াই, লড়াই, লড়াই চাই"। তবে কীভাবে, কোথায়, কোন পদ্ধতিতে? উত্তর নেই। এ যেন, 'লাও তো বটে, কিন্তু আনে কে'। ফলে ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে ব্রিগেড যেন অন্তঃসার শূন্যই! রাজনীতির পণ্ডিতদের একাংশ মনে করছেন, 'রেজিমেন্টেড' দলের অন্দরে যে অম্লরস তৈরি হয়েছে তা চুঁইয়ে পৌঁছে গিয়েছে পার্টির নীচু স্তরে। ফলস্বরূপ, গোটা পরিকাঠামোই ভঙ্গুর! বামপন্থা বা সাম্যবাদের 'ইজম' এখনও মুছে না গেলেও, বামপন্থী শক্তি হিসেবে নিজেকে 'প্রজেক্ট' করতে ব্যর্থ সিপিআইএম (CPIM)।   
শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর, বসতি - চার গণসংগঠনের ডাকে রবিবার ব্রিগেড সমাবেশের আয়োজন। তাতে বক্তা তালিকায় ছিলেন মোট ৬ জন। মহম্মদ সেলিম ছাড়াও বক্তব্য রাখেন কৃষকসভার অমল হালদার, খেতমজুর সংগঠনের নিরাপদ সর্দার, বন্যা টুডু, বসতি উন্নয়ন সমিতির সুখরঞ্জন দে, সিটুর অনাদি সাহু। প্রত্যেকের বক্তব্যে তৃণমূল, বিজেপি, আরএসএসকে আক্রমণ করে। প্রত্যেকের বক্তব্যে রাজ্যে কর্মসংস্থান, শিল্পের অভাব, সাম্প্রদায়িক অশান্তি থেকে আর জি কর কাণ্ড নিয়ে খোঁচা দিতে দেখা যায়। বন্যা টুডুর মুখে শোনা গিয়েছে দেউচা পাচামির কথা। আবার সেলিমের মুখে বারবার শোনা গিয়েছে হুঙ্কার। কিন্তু তা দিশাহীন তর্জন গর্জন ছাড়া যেন কিছুই নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যে সমস্ত ইস্যুতে সুর চড়ালেন বক্তারা, সেসব তো সভায় আসা খেটে খাওয়া মাটির মানুষদের জানাই ছিল। এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার করতে হবে, সে বিষয়ে কোনও দিশা পেলেন না লাগাতার হারে জর্জরিত লাল শিবিরের প্রায় সকলেই।

Advertisement

ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোয়ার যে বিরাট বড় ফ্যাক্টর সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আবার হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করে এগোতে চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। তার মাঝে সিপিএম যে দিশাহীন সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আর সে কারণেই ব্রিগেডের জৌলুসও যেন নেই। বক্তাদের বক্তব্যের ঝাঁজ নেই। বাধ্য হয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথীর মতো রাজ্য সরকারের জনমুখী প্রকল্পকে হাতিয়ার করতে হল লাল শিবিরকে। তরুণ তুর্কিদেরও এগিয়ে দেওয়ার তৎপরতা নেই বাম শিবিরে। একুশের নির্বাচনে সৃজন, দীপ্সিতার ভোটযুদ্ধে লড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জয়ের মুখ দেখতে পারেননি তাঁরা। ব্রিগেডে তাঁদের বলারও সুযোগ দেওয়া হল না। আবার সেলিমের কথাতেও ফাঁকফোঁকর রয়েছে বহু। নিজেই ব্রিগেড মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলছেন, "হিন্দু মুসলমানের আবেগ নিয়ে খেলা করব না।" অথচ সংখ্যালঘুদের যে ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে দেখে সিপিএম তা গত একুশের ব্রিগেডে প্রমাণ করেছেন খোদ দলের 'বড় কর্তা' সেলিমই। সেদিন আইএসএফ প্রধান আব্বাস সিদ্দিকিকে নিয়ে সেলিমের 'মাতামাতি'র যেন অন্ত ছিল না। বাধ্য হয়ে বক্তব্য থামাতে বাধ্য হন অধীর। দৃশ্যত বিরক্ত অধীর বক্তৃতা থামিয়ে ডায়াস ছেড়ে নামার তোড়জোড় শুরু করেন। যদিও পরে সেলিম-সূর্য পরিস্থিতি সামাল দেন। সুতরাং সবমিলিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ব্রিগেডের সমাবেশ পুরোপুরি 'ফ্লপ' তা বলাই যায়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর, বসতি - চার গণসংগঠনের ডাকে রবিবার ব্রিগেড সমাবেশের আয়োজন। তাতে বক্তা তালিকায় ছিলেন মোট ৬ জন।
  • ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে ব্রিগেড যেন অন্তঃসার শূন্যই!
  • বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার করতে হবে, সে বিষয়ে কোনও দিশা পেলেন না লাগাতার হারে জর্জরিত লাল শিবিরের প্রায় সকলেই।
Advertisement