রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিধানসভায় শূন্য, লোকসভায় শূন্য। শুধু শূন্য নয়, রাজ্যের অধিকাংশ লোকসভা কেন্দ্রে জামানত বাঁচানোর মতো জায়গাতেও নেই সিপিএম। অন্তত ২০২৪ লোকসভার ফল সেকথাই বলছে। অথচ সোশাল মিডিয়ায়, কিংবা মিটিং-মিছিলে জনসমর্থনের কমতি নেই। সেই জনসমর্থনকে ভোটবাক্সে টানতে এবার পেশাদার ভোটকুশলী চাইছে সিপিএম।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। তাতে একাধিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকের নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। প্রথম পদটিই হল রাজনৈতিক বিশ্লেষকের। যার মূল কাজ হবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে দলকে পরামর্শ দেওয়া। যে কাজটি ২০২১-এ তৃণমূলের হয়ে করেছেন প্রশান্ত কিশোর। তাতে অভাবনীয় সাফল্যও পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল। দিকে দিকে শূন্য হয়ে যাওয়ার পর হয়তো সেই পিকের ধাঁচের কারও শরণাপন্ন হতে চলেছে বামেরা।
নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে, তরুণ প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে দিয়েও কোনও লাভ হয়নি। একুশের বিধানসভা ভোটে শূন্যের গেরো কাটেনি। চব্বিশের লোকসভা ভোটেও আসন প্রাপ্তির হার শূন্য। বাড়েনি ভোট শতাংশের হারও। কেন ঘুরে দাঁড়ানো যাচ্ছে না তা নিয়ে সিপিএম দলের অন্দরে কাটাছেঁড়া শুরু হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে পা না মেলানোর অভিযোগ সিপিএমে নতুন নয়। অতীতের কম্পিউটার, ইংরেজি বাতিল থেকে সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধতন্ত্রের হয়েছে প্রতি পদে। লোকসভা নির্বাচনের পর 'শূন্য'তা কাটাতে দলের ভেতরেই দাবি উঠেছে, গতানুগতিক ধারা ভেঙে এবার পিকের মতো কাউকে দরকার সিপিএমে। কোনও পেশাদারি সংস্থার সাহায্য নেওয়া যায় কি না, সেটাও ভাবার সময় এসেছে বলে মনে করছে পার্টির একাংশ।
দেশের বাকি দলগুলির উদাহরণ টেনে সিপিএমের এক প্রথম সারির নেতা জানান, 'তৃণমূলও সাহায্য নিয়েছে পেশাদার সংস্থা আইপ্যাকের। রাহুল গান্ধীর পাশে আছেন সুনীল কানুগোলুর মতো মাথা। বিহারে তেজস্বী থেকে উত্তরপ্রদেশে সপা সবার সাফল্যের পিছনে রয়েছে পেশাদার সংস্থা। ফলে সাম্প্রতিক সময়ের নিরিখে এই সত্যকে অস্বীকার করা কোনওভাবেই উচিত নয়।'