বিশেষ সংবাদদাতা: লোকসভা নির্বাচন জাগ্রত দ্বারে। বিজেপিকে রুখতে মাঠে নেমেছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। এই বাংলাতেও আসন রফা করতে চলেছে তৃণমূল ও কংগ্রেস। আর এহেন পরিস্থিতিতেই প্রশ্ন জাগছে সিপিএমকে (CPM) নিয়ে। জোট শরিক হলেও রাজ্যের প্রাক্তন শাসকদলের অবস্থানে এখনও কুয়াশা। জাতীয় স্তরে মমতার পাশে দেখা গিয়েছে সীতারাম ইয়েচুরিকে। অথচ রাজ্যে আলিমুদ্দিন বলছে তৃণমূল ও বিজেপি, দুইয়ের বিরুদ্ধেই লড়ার কথা। আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক। সেই বৈঠকেই ঠিক হতে পারে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বামেদের স্ট্র্যাটেজি।
বৈঠকে কী হবে তা সময় বলবে। এই মুহূর্তে সিপিএমকে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হবে কি না, সেটা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করাটা আমাদের কাজ নয়। কোন রাজনৈতিক দল কী করবে সেটা তাদের নিজের ব্যাপার। বাংলার মানুষ জানে তৃণমূল ও বিজেপি বিপজ্জনক শক্তি। তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সকলকে একজোট করাটাই আমাদের মনোভাব। মানুষ বিজেপি ও তৃণমূলের বিরূদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে চায়।” একই কথা শোনা গেল সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মুখে। তাঁর কথায়, “বিজেপি (BJP) ও তৃণমূল-বিরোধী যে শক্তি আছে তাদের সঙ্গে আমরা আসন সমঝোতা করব। এ রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল (TMC) বিরোধী শক্তিকে আমরা একজোট করার ডাক দিয়েছি। কংগ্রেস কী করবে সেটা বিধান ভবনে জিজ্ঞেস করুন।”
[আরও পড়ুন: অভিষেকেই রিচার হাফ সেঞ্চুরি, ব্যাটে দীপ্তি-জেমাইমা-স্মৃতির দাপটে ব্যাকফুটে অস্ট্রেলিয়া]
তাঁদের এই মন্তব্য মাথায় রাখলে মনেই হবে, বিজেপি ও তৃণমূল দুইয়ের সঙ্গেই সমান দূরত্ব রেখে এগতে চাইছে বামেরা। কিন্তু তাহলে গত মঙ্গলবার কী হল? ১৯ ডিসেম্বর ইন্ডিয়া (INDIA) জোটের চতুর্থ বৈঠকে কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধীর পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন। ছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব, শরদ পওয়ার, নীতীশ কুমার ও আরও অনেকে। আর সেই বৈঠকেই ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরিও। রাহুলের ডানে মমতা বামে ইয়েচুরিকে দেখে আসন রফার ফর্মুলা হাতে এল বলেই অনেকে মনে করছিলেন।
তবে এ এক বিরাট ধাঁধা! ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে তৃণমূলের পাশে বসতে সমস্যা নেই, অথচ রাজ্যে বৈরিতা! এ যেন ‘ভাবের ঘরে চুরি’। সামনের সপ্তাহের বৈঠকেও কি সেই ধাঁধা কাটবে? সন্দিহান ওয়াকিবহাল মহল। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি এমন বৈপরীত্যই এখন সিপিএমের স্বাভাবিক ছবি?