রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: INDIA জোট নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে পার্টি লাইন স্পষ্ট করলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md. Selim)। শনিবার মহাজাতি সদনে মুজফ্ফর আহমেদের ১৩৫তম জন্মদিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সেলিম জানালেন, বাংলায় বিজেপি ও তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়াই চলবে সিপিএমের। জাতীয় স্তরে মোদি বিরোধী জোটে তৃণমূলের (TMC) সঙ্গে সিপিএমের থাকা নিয়ে পার্টির নিচুতলায় প্রশ্ন উঠেছে। সিপিএমের দ্বিমুখী নীতি নিয়ে বিভ্রান্ত জেলাস্তরের কর্মী, সমর্থকরা। সেই বিভ্রান্তি কাটাতেই জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট কেন, সেই ব্যাখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের লড়াইয়ে যে তার কোনও প্রতিফলন হবে না, সেটাও এদিন স্পষ্ট করে দিলেন সিপিএম (CPM) রাজ্য সম্পাদক।
শনিবার মুজফ্ফর আহমেদের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘পাটনা-বেঙ্গালুরুর বৈঠক হয়ে গেল। বিরোধীরা একসঙ্গে বসেছে, এটা নতুন নয়। জ্যোতি বসুও একসময়ে বসেছিলেন। প্রদীপ জ্বালাতে গেলে সলতে পাকাতে হয়। বিজেপির অপশাসন দেশের মানুষের ঐক্য-সংহতিকে ভেঙে দিচ্ছে। জাতপাত, ধর্মের নামে ভাগ করছে। ইতিহাস বিকৃত করছে। পার্টি কংগ্রেস ও কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত, দেশকে বাঁচাতে বিজেপির বিরুদ্ধে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে এককাট্টা করতে হবে। বামপন্থীদের সঙ্গে যারা আসতে চায় সকলকে নিতে হবে।’’ পাশাপাশি সেলিম স্পষ্ট করে দেন, প্রতিটা রাজ্যের বাস্তব পরিস্থিতির উপরই নির্বাচনী সমঝোতা হবে। এ রাজ্যে বিজেপি (BJP) ও তৃণমূল (TMC) উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়াই চলবে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘ঘরের দরজা ভাল করে এঁটে রাখো’, ‘বোন’ বলে পরামর্শ দেওয়া রুদ্রনীলের বিরুদ্ধে FIR রাজন্যার]
একইসঙ্গে সেলিমের বার্তা, ‘‘কেন্দ্রীয় বা রাজ্যের বাহিনী নয়, নিজেদের বাহিনী তৈরি করতে হবে। ঝান্ডা থাকলে ডান্ডা বানাতে হবে। ঝান্ডার ডান্ডাকে তো মোটা করতেই হবে। কোনও ৫৬ বা ৩৫৬ নয়।’’ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কড়া সমালোচনা শোনা যায় সেলিম, সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুদের গলায়। সেলিমের কটাক্ষ, মোদি-শাহ-যোগীর দোকানে সাংসদ-বিধায়ক কেনাবেচা হয়। বামফ্রন্টকেও আরও শক্তিশালী করার ডাক দিয়ে সেলিম বলেছেন, ‘‘বর্ধিত বামফ্রন্ট করতে হবে।’’ বামেদের বাইরে সমস্ত বামপন্থী শক্তিকে একজোট করা যে কঠিন কাজ, তাও অবশ্য এদিন মেনে নিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: চব্বিশের ভোট পর্যন্ত বঙ্গ বিজেপিতে বদল নয়, তিনিই রাজ্য সভাপতি থাকছেন, দাবি সুকান্তর]
কেন সবাই INDIA জোটে, তার সামান্য ব্যাখ্যা দিয়ে সূর্যকান্ত মিশ্রর বক্তব্য, বিজেপির সঙ্গে দেশের আর কোনও পার্টিকে এক করা যায় না। সারা দেশে বিজেপিকে বিচ্ছিন্ন ও পরাস্ত করাই লক্ষ্য। বিমান বসু আহ্বান জানান, সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকে পরাস্ত করতে শপথ নিতে হবে। এদিন মুজফ্ফর আহমেদ স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয় দু’টি বইয়ের লেখককে। অনুষ্ঠানে ছিলেন সিপিএম নেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, কল্লোল মজুমদার, শমীক লাহিড়ী, অনাদি সাহু, সুমিত দে-রা।