রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ঠিক যেন সিনেমার চিত্রনাট্য। প্রাতঃভ্রমণে দেখা। আলাপ। ঘনিষ্ঠতা। ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল। বছর চারেক পর এল মাহেন্দ্রক্ষণ। শুক্রবার গোধূলি লগ্নে এক হল দু'টি মন। রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে সাংসারিক ইনিংস শুরু দিলীপের। সহযোদ্ধা থেকে সহধর্মিণী রিঙ্কু। নিউটাউনের বাড়িতে সইসাবুদের পর বৈদিক মতে বিয়ে সারেন তাঁরা।
পরনে লাল টুকটুকে বেনারসি। গা ভর্তি সোনার গয়না। মাথায় শোলার মুকুট। ঠোঁটের কোণে চওড়া হাসি।
বধূবেশে রিঙ্কু মজুমদার
পার্লার থেকে বেরিয়ে সোজা নিউটাউনে দিলীপ ঘোষের বাড়িতে পৌঁছন কনে রিঙ্কু। চেনা ছক ভেঙে বরের বাড়িতে নিজেই যান বিয়ে করতে।
বধূবেশে দিলীপের বাড়িতে পা রিঙ্কুর
ততক্ষণে বিয়ের সাজে প্রস্তুত বিজেপি নেতা। হলুদ পাঞ্জাবিতে সাজেন একষট্টির দিলীপ।
হলুদ পাঞ্জাবিতে বরবেশে দিলীপ ঘোষ
পরে অবশ্য সাদা পাঞ্জাবি, মাথায় টোপর পরে বিয়েতে বসেন দিলীপ ঘোষ। উলু ও শঙ্খধ্বনিতে গমগম করতে থাকে গোটা বাড়ি।
ঘনিষ্ঠ বৃত্তে বিয়ে সারেন দু'জনে। দিলীপ ঘোষের মা-সহ পরিবারের লোকজন এবং রিঙ্কুরও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠরা বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। রিঙ্কুর ছেলে প্রীতম অবশ্য বিয়েতে ছিলেন না। বহুজাতিক সংস্থার কর্মী। গুড ফ্রাইডের ছুটিতে বেড়াতে গিয়েছেন। তাই মায়ের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারেননি প্রীতম। তবে মায়ের দ্বিতীয়বার বিয়ের সিদ্ধান্তে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাঁর।
বিজেপির ডাকাবুকো নেতা দিলীপ ঘোষ। 'দাবাং' নেতার চোখা চোখা ভাষাই যেন ইউএসপি। তাঁর সঙ্গে ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণের ফাঁকে বিবাহবিচ্ছিন্না, এক সন্তানের মা রিঙ্কুর আলাপ। উত্তর কলকাতা শহরতলির বিজেপি পর্যবেক্ষক রিঙ্কু। দিলীপের 'বোল্ডনেসে' মুগ্ধ তিনি। আলাপের কয়েক বছর পর বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেন 'দিলীপদা'কে। মনে অনুরাগের ছোঁয়া লেগেছিল একষট্টির 'যুবকে'র।
মনে প্রেমের জোয়ার চললেও, মুখে তা প্রকাশ করেননি। বরং রাজনৈতিক মতাদর্শের কথা ভেবে কিছুটা পিছিয়ে যান। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মাসতিনেক সময় চেয়ে নেন ঝাঁজাল নেতা। পরে অবশ্য মায়ের জোরাজুরির কাছে হার মানেন। ছাঁদনাতলায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। সংঘের প্রচারক থেকে সংসার জীবনে পা দিলীপের। আপাতত শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছেন নবদম্পতি।
