নব্যেন্দু হাজরা: কালনার তাঁত থেকে বিষ্ণুপুরের বালুচরি, ফুলিয়ার হ্যান্ডলুম থেকে মুর্শিদাবাদের সিল্ক - এক ছাদের নিচে বাংলার সমস্ত ঐতিহ্যবাহী শাড়ির রকমারি সম্ভার! শুধু তাই নয়, রসনাতৃপ্তির জন্য দেশি-বিদেশি নানা ধরনের পদও চেখে দেখার সুযোগ পাবেন। শুক্রবার এই সমস্ত সুবিধা নিয়ে বাইপাসের ধারে বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গন তথা মিলনমেলায় শুরু হল 'বেঙ্গল শপিং ফেস্টিভ্যাল'। বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2024) আগে দুবাইয়ের ধাঁচে এ ধরনের শপিং ফেস্টিভ্যাল শহরে এই প্রথম। শুক্রবার তার ভারচুয়াল উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্থ উপদেষ্টা অমিত মিত্র। মুখ্যমন্ত্রী মেলার ভারচুয়াল উদ্বোধন করে বলেন, পুজোর আগে গ্রামবাংলার অর্থনৈতিক বিকাশে এ ধরনের ফেস্টিভ্যাল খুবই উপযোগী হবে। মিলনমেলা প্রাঙ্গনে মোট ৪৩০ টি স্টল রয়েছে। এই মেলা চলবে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
বেঙ্গল শপিং ফেস্টিভ্যালের মঞ্চে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা। ছবি: সায়ন্তন ঘোষ।
শুধু বেঙ্গল শপিং ফেস্টিভ্যালই নয়, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে খুলে গেল রাজ্যের আরও তিনটি 'বাংলার শাড়ি'র আউটলেট। হলদিয়ার দুর্গাচক, নিউটাউনের ইকো পার্ক ও ফুলিয়ায় খুলে গেল তিনটি দোকান। পুজোর আগে এসব জায়গা থেকেও নিজেদের পছন্দমতো খাঁটি ঐতিহ্যের শাড়ি পছন্দ করে কিনতে পারবেন। পাশাপাশি কলকাতায় পাঁচদিনের শপিং ফেস্টিভ্যালে কেনাকাটার সুবর্ণ সুযোগ তো রয়েছেই। দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মিলনমেলায় এই ফেস্টিভ্যাল খোলা থাকবে আমজনতার জন্য। এদিন ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুদ্র-কুটির শিল্প দপ্তর, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, তাঁতি ও বস্ত্রশিল্পীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ক্ষুদ্র-কুটির শিল্পদপ্তরের একাধিক সামগ্রী নিয়ে সেজে উঠেছে মিলনমেলা প্রাঙ্গন। ছবি: সায়ন্তন ঘোষ।
২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে বস্ত্র ও বয়ন শিল্পের দিকে বাড়তি নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। জোর দেওয়া হয়েছে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পে। শিল্পীদের হাতের কাজের শুধু কদরই নয়, তার বিপণনের দিকটিও গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে রাজ্য সরকার। গত ১৩ বছরে এই সংক্রান্ত কাজের পরিধি বেড়েছে অনেক গুণ। এই মুহূর্তে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বস্ত্র হাব এই পশ্চিমবাংলা। দেশে-বিদেশে সমাদৃত বাংলার বস্ত্রশিল্পীদের হাতের কাজ।
বাংলার হস্তশিল্পীদের সামগ্রী বেঙ্গল শপিং ফেস্টিভ্যালে। ছবি: সায়ন্তন ঘোষ।
আর তাকে কাজে লাগিয়েই পুজোর আগে অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করতে দুবাইয়ের ধাঁচে শপিং ফেস্টিভ্যাল শুরু হল শুক্রবার থেকে। দেশি-বিদেশি নামীদামি ব্র্যান্ডের সামগ্রীর পাশাপাশি থাকছে বাংলার 'জিআই' স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ২৭টি পণ্য। মঞ্জুষা, তন্তুজ, বাংলার শাড়ি, বিশ্ব বাংলা মার্কেটিং কর্পোরেশন, বঙ্গশ্রী, রেশম শিল্পীদের স্টল থাকবে এই ফেস্টিভ্যালে। পুজোর আগে এই মেলায় সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। আগামী বছরের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন। তার আগে এই শপিং ফেস্টিভ্যালও বেশ বড় করেই করছে রাজ্য।