স্টাফ রিপোর্টার: আজ সপ্তমী। মণ্ডপগুলিতে জনজোয়ার আছড়ে পড়বে। সেই ভিড় সামলাতে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। মহালয়া থেকেই 'প্যাণ্ডেল হপিং'-এ নেমে পড়েছেন মানুষ। পিল পিল করে জেলা থেকে শহরে লোক ঢুকছে। যানজট সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। তার উপর ধর্মতলায় চিকিৎসকদের অনশনমঞ্চের জেরে রাজপথে যানজট তৈরি হচ্ছে। সেই থেকে সর্তক পুলিশ প্রশাসন।
এবারে পুজো বেশ অন্যরকম। প্রতিবাদ ও উৎসব দুই দেখছে শহর। ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তার অনশন। অন্যদিকে লালবাজারের সামনে অবস্থান। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মণ্ডপমুখী জনতার ভিড়। সব মিলিয়ে উৎসবের মরশুমে ব্যাপক চাপে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দাদের কাছেও খবর রয়েছে, পুজোর দিনগুলিতে মণ্ডপে মণ্ডপে গন্ডগোল করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাই মণ্ডপগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। সেখানে সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। অভয়া পরিক্রমা নিয়ে চাঁদনিতে যে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল, এর পর শহরে মণ্ডপ চত্বরগুলিতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে খবর।
বুধবার ষষ্ঠীর দিন অভয়া পুজো মণ্ডপ পরিক্রমা ঘিরে রাস্তায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয় ধর্মতলা চত্বরে। চাঁদনি চকে জুনিয়র চিকিৎসকদের আটকালে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। হেয়ার স্ট্রিট থানার অতিরিক্ত ওসি শ্রাবন্তী ঘোষের হাত মচকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। আরেক পুলিশকর্মীর ইউনিফর্মও ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভিড়ের মধ্যে মিনিডরকে কার্যত হাইজ্যাক করে ধর্মতলায় চিকিৎসকদের ধরনামঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় ঘণ্টাখানেকের উপর রাস্তায় যান চলাচল থমকে যায়। জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, মণ্ডপগুলিতে অভয়া পরিক্রমা করতে চেয়ে পুলিশকে মেল করে জানানো হয়। তা সত্ত্বেও পুলিশ আমাদের পরিক্রমাকে জোর করে আটকে দেয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, দক্ষিণ কলকাতার পুজো মণ্ডপগুলি অভয়া পরিক্রমা করতে চাইছিল। কিন্তু এখন সেদিকে মণ্ডপগুলিতে দর্শকদের লম্বা লাইন। ভিড় রাস্তায় এসে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মিনিডর নিয়ে মণ্ডপ চত্বর ধরে ঘুরলে দক্ষিণ কলকাতার ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ত। সেই রেশ এসে পড়ত মধ্য কলকাতা, ইএম বাইপাসেও। এদিন পুজো মণ্ডপেও কয়েকজন লিফলেট বিলি করে এবং শ্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁদেরকে লালবাজারে নিয়ে আসে বলে খবর। এবার পুজোয় মণ্ডপে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হতে পারে বলে আশঙ্কায় ছিলেন পুজোকর্তারা। পুলিশকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। সর্তক রয়েছে পুলিশও।
চতুর্থী থেকে পুলিশ রাস্তায় নেমেছে। পুজোর ভিড় সামলাতে এবার দশ হাজার পুলিশ রয়েছে রাস্তায়। রয়েছে ট্রাফিক, স্পেশাল ব্রাঞ্চ এবং গোয়েন্দা বিভাগ। ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক রয়েছেন ৩৬জন। ২০০টি পিকেট করা হয়েছে। কোথাও কোনও গন্ডগোল হলে যাতে দ্রুত পৌঁছনো যায় তার জন্য এইচআরএফএস (হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড) রয়েছে ২৫টি। মণ্ডপগুলিতে ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে ৩০টি। আজ থেকে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। জলপথেও নজরদারি চালাচ্ছে রিভার ট্রাফিক পুলিশ। জলপথে দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেজন্য রয়েছে পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা টিম।