কৃষ্ণকুমার দাস: নবান্ন অভিযানে বঙ্গ বিজেপি (BJP) কতটা সফল, কতটা ব্যর্থ, ভবিষ্যতের রসদই বা কতটা জমল – সেসব রাজনীতি সচেতন তার্কিকদের আলোচ্য বিষয়। কিন্তু গেরুয়া ব্রিগেডের এই কর্মসূচি আমজনতার কাছে যথেষ্ট খোরাকের রসদ জুগিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’ – এই হুঁশিয়ারি বাক্যই যেন বিজেপির নবান্ন অভিযানের ‘পরম প্রাপ্তি’। মহিলা পুলিশের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বলা এই কথা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাসি-মশকরা চলছে। তৈরি হয়েছে বহু মিম। এবার সেই হাসাহাসির রেশ পৌঁছে গেল বিধানসভা ভবনে (West Bengal Assembly)। আজ, অধিবেশনের প্রথম দিন শুভেন্দু অধিকারী হাজির না থাকলেও যেন তাঁরই অদৃশ্য উপস্থিতি। ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’ নিয়ে হাসি, মশকরায় বুঁদ মহিলা বিধায়করা।
সবে দুপুর গড়িয়েছে। অধিবেশন তখনও শুরু হয়নি। তার আগে বিধানসভা ভবনের হলঘরে বসে একেবারে আড্ডার মুডে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, জুন মালিয়া, লাভলি মৈত্র, অদিতি মুন্সিরা। আলোচ্য বিষয় একটাই – নবান্ন অভিযানের মহিলা পুলিশের উদ্দেশে শুভেন্দু অধিকারীর চার শব্দের হুঁশিয়ারি বাক্য – ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য থেকে জুন মালিয়া, লাভলি মৈত্র, অসীমা পাত্র – সকলেই হাসিতে মশগুল এ নিয়ে। নানা ভঙ্গিতে একেকজন বলছেন – ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’। অধিবেশন শুরুর আগে পর্যন্ত তা নিয়েই তুমুল হাসিঠাট্টা চলল।
[আরও পড়ুন: ‘আমাকে বাঁচতে দিন, দয়া করে জামিন দিন’, আদালতে কেঁদে ফেললেন পার্থ]
বিষয়টি নিয়ে সেলিব্রিটি বিধায়ক লাভলি মৈত্র (Lovely Moitra) বলছেন, ”এখন তো বিধানসভায় উনি এলেই আমরা বলব – ডোন্ট টাচ মাই বডি। উনি নাকি মহিলাদের মায়ের মতো দেখেন। কিন্তু দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সবচেয়ে বেশি বাজে কথা বলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাই। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ধর্ষণ হয় বেশি। কাল একটা কমেডি হল। দেখলাম, ভালই লাগল।” জুন মালিয়ার বক্তব্য, ”আসলে ম্যাডাম সুচিত্রা সেন ওই ডায়লগটা এত ফেমাস করে দিয়ে গিয়েছেন, যে সেসময় আমার ওটাই মনে পড়ল। সিনেমার কাট টু-র মতো ঠিক। চোখের সামনে ভেসে উঠল রিনা ব্রাউন। আর রাজনৈতিকভাবে কিছুই বলার নেই। এত গুরুত্বহীন!”
[আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় তৃণমূলের শক্তিবৃদ্ধি, ঘাসফুলে মিশে গেল আস্ত একটা দল]
মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযানে লালবাজারের মহিলা পুলিশ অফিসার শুভেন্দুকে আটকাতে গেলে তিনি কার্যত গর্জে উঠে বলেন, ”ডোন্ট টাচ মাই বডি, আই অ্যাম মেল।” পুলিশ পালটা বলে, ”পুলিশের কাজে মহিলা-পুরুষ ভাগ নেই।” কিন্তু সেই যুক্তির কথা মানতে চান না বিরোধী দলনেতা। আর তাঁর সেই অসহিষ্ণুতা নিয়ে মিমের বন্যা সোশ্যাল মিডিয়ায়। এবার তা নিয়ে হাসাহাসিতে মগ্ন মহিলা বিধায়করা।