ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বাংলাদেশে ভোটের মরশুম। ৭ জানুয়ারি সেখানে সাধারণ নির্বাচন। জোর কদমে চলছে প্রস্তুতি। এই আবহে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কলকাতায় আমন্ত্রণ জানাতে চায় রাজ্যের বাম শরিকদল ফরওয়ার্ড ব্লক। কলকাতার সঙ্গে হাসিনার মধুর সম্পর্ক। স্বাভাবিকভাবেই তিনি কলকাতায় এলে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যাবে।
কিন্তু হাসিনাকে (Sheikh Hasina) কলকাতায় আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা কেন? উদ্দেশ্য, স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্যতম সহযোগী দলের প্রাক্তন নেত্রী লীলা রায়কে স্মরণ। তাঁর স্মরণে দলীয় সদর কার্যালয়ের সভাগৃহ তৈরির কাজে হাত দিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক। এ শহরে প্রথম এই ধরনের সভাগৃহ হবে। তারই উদ্বোধনে শেখ হাসিনাকে শহরে আনতে চায় বাম শরিকদল। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল লীলাদেবীর।
[আরও পড়ুন: ৩ রাজ্যে ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের সঙ্গে জোট হয়নি কেন? হারের ব্যাখ্যা চাইলেন রাহুল]
জানা যায়, পীড়িত নারীদের উদ্ধারের জন্য সংগঠন তৈরি করেছিলেন লীলাদেবী। তাঁর অধীনে কাজ করতেন আরেক স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। দেশ স্বাধীন হলে ভারতের সংবিধান তৈরির গণ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন লীলাদেবী। নেতাজির সঙ্গেই কংগ্রেস রাজনীতি করতেন তিনি। ফরওয়ার্ড ব্লক তৈরির পর স্বামীর সঙ্গে সেই দলে চলে আসেন। আমৃত্যু যোগ ছিল বিতর্কিত ‘ভগবানজি’ নামের সেই ব্যক্তির সঙ্গে, যাঁকে নেতাজির ছদ্মরূপ বলে দাবি করা হয়।
লীলাদেবীর জন্ম অসমে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা ছাত্রী ছিলেন তিনি। পড়েছেন কলকাতায় বেথুন কলেজে। সদ্য লীলাদেবীকে নিয়ে বাংলাদেশে চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রদর্শনী সভাগৃহও তাঁকে উৎসর্গ করা হয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লক তাদের প্রস্তাবিত কাজ শেষ করলে কলকাতা সেই পর্বে শরিক হবে। দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “সভাগৃহটা আমরা লীলাদেবীর নামে তৈরি করে শেখ হাসিনার হাতে তার উদ্বোধন করাতে চাইছি।” দলের প্রয়াত নেতা চিত্ত বসুর জন্মদিনে সোমবার তাঁকে শ্রদ্ধাও জানান রাজ্য সম্পাদক-সহ দলের রাজ্য নেতৃত্ব।