অর্ণব আইচ: বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির মাঝে খাস কলকাতায় জালনোট-সহ ধৃত ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার সকালে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে তিনলক্ষ টাকার জালনোট উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। তাকে বাসস্ট্যান্ডে বসিয়েই জেরা করা হয়। আর তাতে রীতিমতো বিস্ফোরক কিছু তথ্য হাতে এল গোয়েন্দাদের। জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম মানোয়ার শেখ, বয়স ৬৮ বছর। আদতে মালদহের বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা হলেও মানোয়ারের মাছ ব্যবসা রয়েছে নাসিকে। সে নিজে একটি জালনোট চক্র চালায় বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। অর্থাৎ এসটিএফের জালে এবার জালনোট পাচারচক্রের মাস্টারমাইন্ড। জেরায় মিলেছে আরও বেশ কিছু বিস্ফোরক তথ্য।
উত্তরবঙ্গ হয়ে কলকাতায় জালনোট ঢুকছে, গোপন সূত্রে এই খবর ছিল এসটিএফের কাছে। সেইমতো পরিকল্পনা করে বৃহস্পতিবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ভি সলোমন নেসাকুমারের নেতৃত্বে এসটিএফের একটি দল ধর্মতলায় হাজির হন। উত্তরবঙ্গ থেকে আসা একটি বাসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে এক যাত্রীর ব্যাগ থেকে ৫০০ টাকা নোটের বান্ডিল উদ্ধার হয়। অবিকল আসলের মতো দেখতে হলেও এগুলি সবই জালনোট। সবমিলিয়ে অঙ্কটা ২.৯৯ লক্ষ টাকা। এর পর তাকে আটক করে জেরা শুরু করেন তদন্তকারীরা।
তাতে জানা যায়, বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা হলেও মানোয়ার শেখ কালিয়াচক থেকে কলকাতার বাসে উঠেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, এখান থেকে নাসিক চলে যাবেন। এর পর মাছের ব্যবসায় লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেনের মাঝে জালনোট মিশিয়ে পাচার করে দেবেন। এভাবেই জালনোটের কারবার ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়বে। মানোয়ার নিজেই একটি পাচারচক্র চালান বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের ধারণা, অবিকল আসলের মতো দেখতে জালনোটগুলি তৈরি হয় বাংলাদেশে। আর এসবের নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের আইএসআই-এর হাত!
আসলে বাংলাদেশের অরাজক পরিস্থিতির সুযোগে ভারত-বিরোধী শক্তিগুলি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ভারতের অর্থনীতিকে নষ্ট করতে তাদের উসকে দিচ্ছে আইএসআই। জালনোটের কারবার ফের রমরমিয়ে শুরু হওয়া তারই অংশ। সীমান্ত লাগোয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীতে এধরনের কার্যকলাপ অনেকটা রোখা গিয়েছিল হাসিনার আমলে। কিন্তু ক্ষমতাবদলের পর আবারও ফের এসব বেআইনি কারবার শুরু হয়েছে। মানোয়ার শেখের গ্রেপ্তারি ও তার থেকে পাওয়া তথ্য অন্তত সেদিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মত গোয়েন্দাদের।