shono
Advertisement
IVF Center

অজানা ব্যক্তির শুক্রাণুতে গর্ভধারণ বধূর! কলকাতার IVF সেন্টারের 'ভুলে'র খেসারত দিল খুদে

সঠিক অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন না হওয়ায় মৃত্যু হয় শিশুর।
Published By: Sayani SenPosted: 11:39 PM Jan 22, 2025Updated: 11:40 PM Jan 22, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন রিল থেকে রিয়েল লাইফের আখ্যান! স্বামীর শুক্রাণু নয়। আইভিএফ পদ্ধতি অবলম্বন করে গর্ভধারণ করেন এক গৃহবধূ। স্বাভাবিক নিয়মে অন্তঃসত্ত্বা হন। কোল জুড়ে এসেছিল সন্তান। কিন্তু জন্মের পর জটিল রক্ত রোগে আক্রান্ত হল শিশু। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করার আগে বাবা-মায়ের ডিএনএ প্রোফাইলিং করা হল। ফল দেখে রীতিমতো বিস্মিত চিকিৎসক। বাবা-মা কারও সঙ্গে ম্যাচ করছে না রুগ্ন শিশুর ডিএনএ। জানা গেল, বাবার শুক্রাণুতে নয়, বরং আইভিএফ সেন্টারের ভুলে অন্য কোনও ব্যক্তির দানের শুক্রাণুতে শিশুকে গর্ভে ধরেছিলেন বধূ। এদিকে, শিশুর শরীর ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে। আবার যে ব্যক্তির শুক্রাণু গর্ভে নিয়েছিলেন ওই মহিলা তার পরিচয়ও অজানা রয়ে যায়। বস্তুত সঠিক অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন না হওয়ায় মাত্র চার বছরেই মৃত্যু হল এক শিশুর।

Advertisement

দক্ষিণ কলকাতার একটি আইভিএফ ক্লিনিকের এহেন ভুল বস্তুত চোখে আঙুল দিয়ে দেখালো বিজ্ঞানের অসাবধানী প্রয়োগ কতটা মারাত্মক হতে পারে! ঘটনার অভিঘাতে বিস্মিত চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। ক্ষুব্ধ রাজ্যের ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট কমিশন। সংশ্লিষ্ট আইভিএফ সেন্টারকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে । বুধবার শুনানির পর কমিশনের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা জানান। ক্ষোভ প্রকাশ করে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনার শিকার হলেন এক দম্পতি । প্রাণ গেল এক শিশুর। শুক্রাণু দাতার খোঁজ না পেয়ে (পড়ুন জৈবিক বাবার) খোঁজ না পেয়ে এবং তার জেরে সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় ওই দম্পতি ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের দ্বারস্থ হন বিচার চেয়ে।

পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি আইভিএফ ক্লিনিকে তিন বারের চেষ্টায় গৃহ বধূর গর্ভে ভ্রূণ প্রতিস্থাপিত হয়। যথাসময়ে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু কিছু দিন পরেই বোঝা যায় মারাত্নক জন্মগত রক্তরোগের শিকার একমাত্র সন্তান। একের পর এক রক্ত রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে ছুটে গিয়েছেন দম্পতি। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনই একমাত্র উপায়। ছোট্ট মেয়েকে হারিয়ে বাবার অভিযোগ, তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের সন্তানের জন্মের নেপথ্যে রয়েছে দানের শুক্রাণু। কিন্তু দাতার খোঁজ না মেলায় চিকিৎসার সুযোগ থাকলেও মেয়েকে বাঁচাতে পারেননি। মৃত্যু হয় ওই শিশুর। অভিযোগ, শিশুর প্রাণরক্ষার জন্য শুক্রাণু দাতার পরিচয় জানাতে বললেও অভিযুক্ত ওই আইভিএফ সেন্টার তা জানাতে পারেনি। মামলার রায় দিতে গিয়ে কমিশনার চেয়ারম্যান বলেন, ওই ক্লিনিকটির যুক্তি ছিল, দানের শুক্রাণুতে আইভিএফ হওয়ার কথা দম্পতিকে জানানো হয়েছিল। প্রমাণস্বরূপ তাঁরা বধূর স্বাক্ষরিত একটি কাগজও দেখায়। কিন্তু কমিশনের চেয়ারম্যান পালটা যুক্তি দিয়ে জানান, কেন্দ্রীয় প্রজনন প্রযুক্তি আইনের নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী, একই সময়ে স্বামী ও স্ত্রী, দুজনকেই সই করতে হয়। অর্থাৎ দুজনের সম্মতি উল্লেখ্য থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে শুধু স্ত্রীর সই রয়েছে। তাই সেটি বৈধ নয়। সে জন্যই ওই ক্লিনিককে মামলাকারীর হাতে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সন্তানের সঙ্গে মিলছে না বাবা-মায়ের DNA!
  • আইভিএফ সেন্টারের 'ভুলে' প্রাণ গেল খুদের।
  • সঠিক অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন না হওয়ায় মৃত্যু হয় তার।
Advertisement