রমেন দাস: দশদিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন যাদবপুরের আহত ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায়। যাদবপুরের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি ফিরলেন। আপাতত তাঁকে দু সপ্তাহ সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। ক্ষতস্থানে ড্রেসিং চলবে। ইন্দ্রানুজের যাবতীয় চিকিৎসার খরচ বহন করবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিন ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে এনে সকলকে ধন্যবাদ জানান ইন্দ্রানুজের বাবা অমিত রায়। উপাচার্যের কাছে আহ্বান জানান, এবার আলোচনায় বসে সমস্যা মেটানোর উদ্যোগ নিক কর্তৃপক্ষ।
গত ১ মার্চ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে নজিরবিহীন অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয় ক্যাম্পাসে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বাম, অতি বাম সংগঠনের সদস্যরা।অভিযোগ, সেসময় ব্রাত্য বসুর গাড়ি ক্যাম্পাস থেকে বেরতে গেলে তাঁর গাড়ির নিচে পড়ে আহত হন অতি বাম ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায়। তাতে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বাঁ পায়ে গুরুতর আঘাত লেগে হাসপাতালে ভর্তি হন ইন্দ্রানুজ। সেই থেকে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। হাসপাতালে ইন্দ্রানুজের সঙ্গে দেখা করতে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন এসএফআই রাজ্য সভাপতি সৃজন ভট্টাচার্য। বাবা অমিত রায়কে ফোন করে ছাত্রের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও।
অবশেষে ১০ দিন পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এখন ২ সপ্তাহ সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। তারপর চেকআপ হবে। ছেলের নিয়ে বাড়ি ফিরে ইন্দ্রানুজের বাবা অমিত রায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, ''এখন ওর বেডরেস্ট। ক্ষতর জায়গাটা নিয়মিত ড্রেসিং করতে হবে। তার জন্য প্রশিক্ষিত নার্স রয়েছে। ওর বাঁ পায়ে যে আঘাত লেগেছিল, তাই সেটা কোনওভাবে নড়াচড়া করা যাবে না। এছাড়া চামড়ায় যে ক্ষত আছে, সেটা ড্রেসিং করতে হবে। ওর চিকিৎসার বিল হাসপাতাল থেকে পাঠানো হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। তারাই এই খরচ দেবেন।''
এদিন ইন্দ্রানুজের বাবা বলেন, ''আমার ছেলে বাড়ি ফিরল। উপাচার্যও বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন। কিন্তু আসল ইস্যুটা থেকে দৃষ্টি ঘুরে গিয়েছে। এই যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি, ক্যাম্পাসে সুস্থ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, সুরক্ষা - এসব নিয়ে যে দাবিদাওয়া ছিল ছাত্রছাত্রীদের, সেটা আড়ালে চলে গিয়েছে। এবার কর্তৃপক্ষের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা আলোচনায় বসুন। উপাচার্য, অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রীরা সকলে মিলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে বের করুন। এটাই একমাত্র সহজ সমাধান।''