অভিরূপ দাস: চিকিৎসকের কাছে আসছেন না। নিজেরাই ওস্তাদি করে ডাক্তারি করছেন! পরে যখন চিকিৎসকদের কাছে আসছেন তখন পরিস্থিতি জটিল। কলকাতার এমন অভিভাবকদের জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করল পুরসভা। ঘরে ঘরে এখন জ্বর, সর্দি, কাশি। কলকাতা পুরসভার নির্দেশিকা, “শিশুর তুমুল জ্বর, কাশিতে নিজেরা ইচ্ছেমতো চিকিৎসা করবেন না। পরামর্শ নিন রেজিস্টার্ড মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনারের।”
আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়েছে অ্যাডিনো ভাইরাস। ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সিরা ঘরে ঘরে আক্রান্ত। প্রতিটি ওয়ার্ডের মেডিক্যাল অফিসার, নার্স, ফার্মাসিস্ট ছাড়াও আমজনতার জন্যেও রয়েছে কলকাতা পুরসভার নির্দেশিকা।
কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্যবিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, ৭০০ আশাকর্মী রয়েছেন কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে। এছাড়াও রয়েছেন ১০০ দিনের স্বাস্থ্যকর্মীরা। আজ থেকে এদের প্রত্যেকে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন।
[আরও পড়ুন: গতিশীল ও আধুনিক করে কলকাতায় ট্রাম চলুক, নয়া দাবি নিয়ে পথে নামছে সিপিএম]
গত তিন মাসে রাজ্যে মারণ অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১১টি শিশু। ঘরে ঘরে এখন জ্বর, সর্দি, কাশি। সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। কলকাতা পুরসভার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জ্বর হলে শিশুর চিকিৎসা বাড়িতে হবে না হাসপাতালে তা ঠিক করবেন ওয়ার্ডের মেডিক্যাল অফিসাররা। অনেকেই বাড়িতে চিকিৎসা করছেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে আসলে দেখা যাচ্ছে শারীরিক অবস্থা জটিল।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিশান্তদেব ঘটক জানিয়েছেন, অ্যাডিনো ভাইরাসের (Adenovirus) ছোবলে যে জ্বর আসছে তা হাইগ্রেড ফিভার। একবারে ১০৩,১০৪ জ্বর উঠে যাচ্ছে। অতিরিক্ত জ্বর থেকে খিঁচুনি শুরু হতে পারে। এছাড়াও অনেক শিশুরই শুকনো কাশি হচ্ছে। একটানা কাশি থেকে সাব কনজাংটিভাল হেমারেজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ ছিঁড়ে যেতে পারে চোখের সূক্ষ্ম শিরা। এসব দিকে কড়া নজর রাখতে হবে। এছাড়াও পরীক্ষা চলছে স্কুলগুলোয়। অতিরিক্ত জ্বর নিয়ে রাস্তায় বেরেলে মাথা ঘুরে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিশান্তদেব ঘটকের।
চিকিৎসকরা বলছেন, সঠিক সময় চিকিৎসা শুরু না হলে ভাইরাল নিউমোনিয়া দেখা দিচ্ছে খুদেদের। যে কারণে কলকাতা পুরসভার নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও শিশু জ্বর, কাশি নিয়ে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এলেই অভিভাবককে জিজ্ঞেস করতে হবে, কতদিন ধরে জ্বর আসছে। অপ্রয়োজনে গুচ্ছ গুচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক নয়। কলকাতা পুরসভা নির্দেশিকায় জানিয়েছে, মেডিক্যাল অফিসারের নির্দেশে ওষুধ দিতে হবে ফার্মাসিস্টকে।