অর্ণব আইচ: ঠিক যেন সিনেমা! সাজানো চিত্রনাট্য, সেইমতো অপারেশন। কিন্তু এত করেও শেষরক্ষা হল না। প্রায় একইরকম ফিল্মি কায়দায় পুলিশও ধাওয়া করে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করল তিন ডাকাতকে (Dacoits)। গভীর রাতে পুলিশ সেজে গাড়িতে তুলে ডাকাতি। গাড়ির চারটি নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হল তিনজন। ঘটনা খাস কলকাতার (Kolkta) বড়তলা এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে উত্তর কলকাতার বড়তলা এলাকায় এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে। অনিরুদ্ধ সিংহ নামে এক যুবক কাজ সেরে বাড়িতে ফিরছিলেন। তখন সময় রাত প্রায় তিনটে। স্টার থিয়েটারের সামনে থেকে বিধান সরণি ধরে হাঁটছিলেন। হঠাৎই একটি গাড়ি সামনে এসে দাঁড়ায়। এক যুবক ছিল স্টিয়ারিংয়ে। অন্য তিন যুবক গাড়ি থেকে নামে। তারা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। অনিরুদ্ধ এত রাতে রাস্তায় কী করছেন, তা জিজ্ঞাসা করা হয়। তাঁকে লালবাজারের (Lalbazar) গোয়েন্দা বিভাগে নিয়ে যাওয়ার নাম করে জোর করে তারা গাড়িতে তোলে। চলন্ত গাড়ির ভিতর অনিরুদ্ধকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত কবি জয় গোস্বামী, ভরতি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে]
এরপর অনিরুদ্ধে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ৮ হাজার টাকা লুট করে তারা। কিছু দূর গিয়ে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে তাঁকে ঠেলে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। ওই যুবক বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যখন তাঁকে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়, তখন তিনি গাড়িটির চারটি নম্বর দেখতে পান। সেই নম্বরের সূত্র ধরেই শুরু হয় তদন্ত। শেষ পর্যন্ত বড়তলা থানার পুলিশ আধিকারিকরা গাড়িটি শনাক্ত করেন। রাতে নাকা চেকিংয়ের সময় যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ ও অরবিন্দ সরণির সংযোগস্থলে গাড়িটি দেখতে পেয়ে পুলিশ সেটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের চোখ এড়িয়ে সেটি পালানোর চেষ্টা করে।
[আরও পড়ুন: রেমডেসিভির বিক্রির নামে প্রতারণা খাস কলকাতায়! পার্ক স্ট্রিটে গ্রেপ্তার চিকিৎসক]
তখন প্রায় ফিল্মি কায়দায় গাড়িটিকে তাড়া করে পুলিশের গড়ি। উত্তর কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে গাড়িটি পালানোর চেষ্টা করলেও তার পিছু ছাড়েননি পুলিশ আধিকারিকরা। শেষ পর্যন্ত সেটিকে তাড়া করে ধরে ফেলা হয়। গাড়ি থেকে নেমে চারজনই পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশকর্মী ও আধিকারিকরাও তাঁদের গাড়ি থেকে নেমে তাদের তাড়া করেন। সুরজ সাউ, মনোজ দাস ও শাহবান খানকে পুলিশ তাড়া করে ধরে ফেলে। বাকি একজন পালিয়ে যায়। রবিবার ধৃতদের ব্যাংকশাল আদালতে তোলা হলে তাদের ২৯ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে যে, গত এক মাস ধরে মধ্য ও উত্তর কলকাতার একাধিক জায়গায় পুলিশ সেজে এভাবেই লুঠপাট চালিয়েছে তারা। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।