অর্ণব আইচ: প্রশ্নপত্রের খসড়া জেনে চাকরিপ্রার্থীদের আগাম জানিয়ে দিতেন ধৃত যুব নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। তার জন্য কুন্তল আগাম টাকাও নিতেন তাঁদের কাছ থেকে। আর কুন্তলের এই কর্মকাণ্ডের গোটাটাই চলত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) জ্ঞাতসারে। এসএসসি দুর্নীতি (SSC Scam)মামলার তদন্তে এমনই বেশ কিছু তথ্য এসেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে। পার্থর সঙ্গে কুন্তলের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের একাংশ থেকেও মিলেছে তথ্য। সেসব খতিয়ে দেখছেন ইডি আধিকারিকরা।
কুন্তল ঘোষকে জেরার মুখে বারবার তাঁর মুখে উঠে এসেছে চিটফান্ড (Chitfund) কর্তা গোপাল দলপতির নাম। গোপাল নামে ওই ব্যক্তির কথা ইডিকে জানিয়েছিলেন তাপস মণ্ডলও। কুন্তল ও তাপসের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা তোলার ঘটনায় মূল লিঙ্ক গোপাল দলপতিই। চাকরিপ্রার্থীদের কয়েক কোটি টাকা তুলেছেন গোপাল দলপতি। কুন্তল ও তাপসের দাবি, তাঁদের কাছ থেকে টাকা গিয়েছে গোপাল দলপতির কাছে। সেই বিপুল কালো টাকা সাদা করতে চিটফান্ড ও একাধিক বেসরকারি সংস্থায় লগ্নি করে গোপাল। সংস্থাগুলির মাধ্যমেই টাকা পাচার হয়। এখন গোপাল চিটফান্ড মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রয়েছেন তিহার জেলে।
[আরও পডুন: আগামী সপ্তাহে ২ দিনের ব্যাংক ধর্মঘট প্রত্যাহার, বড়সড় স্বস্তি গ্রাহকদের]
ইডি (ED)আদালতের অনুমতি নিয়ে গোপাল দলপতিকে জেলে গিয়ে জেরা ও প্রয়োজনে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে। ইডির দাবি, যাঁদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছে, তাঁরা যাতে চাকরি পান, তার জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাহায্য চেয়েছিলেন কুন্তল। পার্থর সঙ্গে কুন্তলের বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাটে উঠে এসেছে এই তথ্য। কুন্তল যে স্কুলে চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের খসড়া দেখেছেন, তা পার্থও জানতেন। এভাবে আগাম প্রশ্ন জেনে সেইমতো চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষার জন্য তৈরি হতে বলতেন কুন্তল।
[আরও পডুন: আস্ত হাসপাতাল, চিকিৎসাযন্ত্রও আধুনিকতম, কিন্তু রোগীরা পুতুল! বিস্মিত করে সিঙ্গাপুর]
এদিকে, শুক্রবারও কুন্তলের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত হুগলির তৃণমূল (TMC) নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করে ইডি। এই নিয়ে পরপর তিনদিন ধরে শান্তনুকে জেরা করা হল। হুগলির বহু চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে যে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে কুন্তল নিয়েছিলেন, সেই তথ্য জেনেছে ইডি। একই সঙ্গে প্রশ্নপত্রের খসড়ার সূত্র ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সঙ্গে কুন্তলের যোগাযোগ আরও স্পষ্ট হয়েছে ইডির কাছে। ইডির সূত্র জানিয়েছে, অ্যাডমিট কার্ডের কপি উদ্ধারের পর তিনশোর বেশি চাকরিপ্রার্থীর তালিকা উদ্ধার করা হয়েছে। বর্ধমান, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া ও অন্যান্য জেলার চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়। তদন্ত করে শান্তনুর একটি রেস্তোরাঁর সন্ধানও মিলেছে।