রমেন দাস: ছাত্র আন্দোলন নাকি আমজনতার শক্তি? কোনটার জোর বেশি? তুলনাটা যদি রাষ্ট্রশক্তির সঙ্গে তাহলে হয়ত ছাত্র আন্দোলনকেই এগিয়ে রাখতে হতো। কিন্তু কথায় আছে, জনতার শক্তি পুঞ্জীভূত হলে অনেক সময় অনেক শক্তিই পিছু হঠে। যেমনটা হল শনিবার সন্ধ্যায় যাদবপুর থানার সামনে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সরব বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ সন্ধ্যা নামতেই রাস্তা অবরোধে বসে পড়েন। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের চাপে সেই অবরোধ তুলতে বাধ্য হলেন তাঁরা।
যাদবপুরে পথ অবরোধ নিয়ে ক্ষুব্ধ পথচারীরা।
এদিকে, শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর হেনস্তার প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিলে নামল তৃণমূল। সুকান্ত সেতুতে যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষের নেতৃত্ব মিছিলে শামিল এলাকার কাউন্সিলররা এবং অগণিত সাধারণ বাসিন্দা।
শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলপন্থী শিক্ষক-অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল পরিবেশ। এসএফআই ও অন্যান্য বামসমর্থিত ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে পোস্টার, ব্যানার হাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। অভিযোগ, এরপর দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সভায় ভাষণ দেওয়াকালীন সেখানে ঢুকে চেয়ার ভাঙচুর করে 'তাণ্ডব' চালায় বামপন্থী ছাত্রদের কয়েকজন।
গাড়ির উপর হামলার কথা কুণাল ঘোষকে জানাচ্ছেন ব্রাত্য বসু। ছবি: সায়ন্তন ঘোষ।
অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী বেরনোর সময়ই চরম আঘাতের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। গাড়ি ঘিরে ধরে চলে বিক্ষোভ। ইটের আঘাতে গাড়ির কাচ ভেঙে লাগে মন্ত্রীর রক্ষীর গায়ে। আহত হন ব্রাত্য বসুও। এসময় বিক্ষোভের মাঝে গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে একজন আহত হন, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাতে আগুনে আরও ঘি পড়ে।
যাদবপুরে বিক্ষোভের মাঝে রক্তাক্ত এক পড়ুয়া। ছবি: সায়ন্তন ঘোষ।
এরপর সন্ধ্যা নামতেই যাদবপুরের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা রাস্তা অবরোধ করেন। তাতে যাদবপুর-ঢাকুরিয়া ও গড়িয়া-গড়িয়াহাটের রাস্তা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। পথচারীরা আটকে পড়েন। যানজট দীর্ঘ হলে যাত্রীদেরই কেউ কেউ এগিয়ে এসে পথ অবরোধ তোলার অনুরোধ জানান। কিন্তু তাতে কাজ না হলে যাত্রীরাই সমবেতভাবে চাপ দেন। তাতে পিছু হঠে অবরোধ তোলেন আন্দোলনকারীরা। রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোডের দুটি লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পরে শিক্ষামন্ত্রীর হেনস্তার প্রতিবাদে পথে নামে তৃণমূল। সুকান্ত সেতুতে যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষের নেতৃত্ব জমায়েত তকরেন সকলে। ছিলেন মন্ত্রী তথা টালিগঞ্জের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাসও। তাঁদের নেতৃত্বে মিছিল এগিয়ে চলে যাদবপুরের এইট বি-র দিকে। সায়নীর বক্তব্য, ''শান্ত যাদবপুরকে অশান্ত করতে চাইছে এরা। কিন্তু এসব করে লাভ নেই। শান্ত বাংলাকে কোনওভাবে অশান্ত করা যাবে না। আমরা রুখে দাঁড়াব। আর ছাব্বিশের ভোটে বড় খেলা হবে। কেউ প্ররোচনায় পা দেবেন না।''
দেখুন ভিডিও:
