shono
Advertisement

বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের ভরতিতে না! তুমুল ক্ষোভের মুখে নতিস্বীকার, ক্ষমা চাইল লরেটো

জাতিবিদ্বেষী ভরতির নিয়মাবলীও বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
Posted: 06:32 PM Jul 04, 2023Updated: 06:34 PM Jul 04, 2023

দীপালি সেন: সম্প্রতি কলকাতার লরেটো কলেজ (Loreto College) তাদের ভরতি প্রক্রিয়ার নিয়মাবলীর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাতে লেখা – বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করা কোন ছাত্রী লরেটো কলেজে স্নাতক স্তরে ভরতি হতে পারবে না। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভের ফেটে পড়ে বিপুল সংখ্যক বাঙালি। এ বিষয়কে বেআইনি ও জাতিবিদ্বেষী আখ্যা দেওয়া হয়। ভারতে বাঙালির অধিকার আদায়ের জাতীয় সংগঠন বাংলা পক্ষ লরেটো কলেজকে হুঁশিয়ারি দেয়, অবিলম্বে বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। তা না করলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দপ্তর এবং ইউজিসির কাছে কলেজের অনুমোদন বাতিল করার দাবি জানানো হবে এবং জাতিবিদ্বেষী এই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বাংলা পক্ষর তরফ থেকে।

Advertisement

৪ঠা জুলাই লরেটো কলেজের সামনে বাংলা পক্ষ বিপুল এক প্রতিবাদ জমায়েত সংগঠিত করে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে স্পষ্টভাবে ৪টি দাবি জানায় –
১. বিজ্ঞপ্তির জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া।
২. বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
৩. যে ফার্স্ট রাউন্ড কাউন্সেলিং হয়ে গেছে, সেটা বাতিল করা।
৪. আগামীতে ভরতি হওয়া বাংলা মাধ্যমের ছেলেমেয়েদের কোনো হেনস্তা বা মানসিক অত্যাচার যাতে না হয়, তার ব্যবস্থা করা।

বাংলা পক্ষর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির বিপুল প্রতিরোধের সামনে দিশেহারা হয়ে লরেটো কলেজ কর্তৃপক্ষ নতি স্বীকার করে এবং বাংলা পক্ষর দাবি মতো বাংলার মানুষের কাছে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চায় এবং অবিলম্বে এই বেআইনি, জাতিবিদ্বেষী ভরতির নিয়মাবলীর বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে।

[আরও পড়ুন: সৌদিতে বসে মিনাখাঁয় প্রার্থী: বাতিল মনোনয়ন, ‘রিটার্নিং অফিসারের কার্যকলাপ সন্দেহজনক’, বলছে হাই কোর্ট]

বাংলা পক্ষর প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলা পক্ষর শীর্ষ পরিষদ সদস্য তথা সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, বাংলা পক্ষর কলকাতা জেলা সম্পাদক অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, বাংলা পক্ষর উত্তর ২৪ পরগনা শহরাঞ্চল জেলা সম্পাদক পিন্টু রায় এবং আইনজীবী দিব্যায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায় এই জয়কে বাংলা পক্ষর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির ক্রমশঃ ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে উৎসর্গ করেছেন।

কৌশিক মাইতি বলেন, “কলকাতার লরেটো কলেজ বলছে ইস্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে যারা পড়েনি, অর্থাৎ প্রকারান্তরে বাস্তবে দিল্লি বোর্ডে যারা পড়েনি, বাংলা মাধ্যমে যারা পড়েছে অর্থাৎ প্রকারান্তরে বাস্তবে যারা পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডে পড়েছে, তাদের এখানে ভরতি হওয়া নিষিদ্ধ। বাংলা ও বাঙালির শত্রু লরেটো একটি জাতিবিদ্বেষী সংস্থা। আজ লরেটো কর্তৃপক্ষ তথা বাংলা ও বাঙালির প্রতিটি শত্রুর কাছে বার্তা গেল যে এ বাঙালি আর সেই মাথা নিচু হয়ে নিজভূমে পরবাসী হয়ে যাওয়া বাঙালি নেই। বাঙালি জাতীয়তাবাদের যুগ এটা। এখন বাংলা ও বাঙালির শত্রুদের জন্য বাংলার মাটি আর ঝুঁকিহীন নয়। জেলার বাঙালিদের বাদ দিতে, বড়লোক বহিরাগতদের স্বার্থরক্ষার জন্য কলকাতায় লরেটো কলেজের বাঙালি বিদ্বেষী কর্তৃপক্ষ এবং বহিরাগতদের মিলিত ষড়যন্ত্র এই বিজ্ঞপ্তি। জেলার বাঙালি মেয়েরা মেধার জোরে ঢুকে গেলে তা লরেটোয় বহিরাগতদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে। বাংলা ও বাঙালির শত্রুদের তাই আজ বুঝে নিয়েছে বাংলা পক্ষ কারণ আমরা জাতির প্রহরী।”

তাঁর কথায়, “এটা কলকাতা থেকে বাঙালিকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার ষড়যন্ত্রের অংশ। ৮৬% বাঙালি অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গে এই লরেটোর স্কুল ও কলেজে বাঙালিরা সংখ্যালঘু কেন? তাহলে লরেটোর স্কুল ও কলেজে বাংলার জনবিন্যাসের প্রতিফলন নেই কেন? লরেটোর বাঙালি বিদ্বেষী কর্তৃপক্ষ এবং বহিরাগতদের মিলিত খেলা এটা। ওদের বাচ্চারা পড়বে, সেখানে বাংলা বলা জেলার ছেলেমেয়েরা মেধার জোরে ঢুকে গেলে তো বাংলা ও বাঙালির শত্রুদের এই জাতিবিদ্বেষ বজায় রাখা মুশকিল হয়ে যাবে। বাঙালি বিদ্বেষ দেখানোর সাহস যেন আর কোন স্কুল-কলেজের না হয়। জয় বাংলা।”

[আরও পড়ুন: চাকরি দেওয়ার নামে তোলাবাজি! বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকেই ধৃত হাই কোর্টের কর্মী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার