দিপালী সেন ও অর্ণব আইচ: দু’সপ্তাহ গা ঢাকা দিয়ে, বারবার সিম পালটেও শেষ রক্ষা হল না। অবশেষে গ্রেপ্তার বাগুইআটি জোড়া খুন (Baguiati Twin Murder) কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী। শুক্রবার হাওড়া স্টেশন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ট্রেনে করে ভিনরাজ্যে পালানোর ছক কষেছিল ধৃত।
গত মঙ্গলবার থেকে বাগুইআটির ২ স্কুল ছাত্র খুনের ঘটনায় উত্তাল বাগুইআটি। কিন্তু অভিযুক্তের হদিশ মিলছিল না। তাকে খুঁজে পেতে রাজ্যজুড়ে তল্লাশি শুরু করে বিধাননগর কমিশনারেট ও সিআইডি। গোপন সূত্র মারফত তদন্তকারীরা জানতে পারেন, শুক্রবার সকালে হাওড়া স্টেশনে আসবে সত্যেন্দ্র। সেই মতো নজরদারি চালায় পুলিশ। হাওড়া স্টেশনে পা দেওয়া মাত্রই সত্যেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। সূত্রের খবর, আদতে বিহারের বাসিন্দা সত্যেন্দ্রর পরিকল্পনা ছিল হাওড়া থেকে ভিনরাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু তার আগেই ধরা পড়ে গেল পুলিশের জালে। বিধাননগর কমিশনারেটে নিয়ে আসা হচ্ছে তাকে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের হদিশ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশ্বজনীন করতেই পুজো অনুদান, হাই কোর্টে জানাল রাজ্য]
সত্যেন্দ্রকে গ্রেপ্তারির খবর বাগুইআটিতে পৌঁছতেই অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন অতনুর মা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। গ্রেপ্তারিতে খানিকটা স্বস্তিতে অতনুর বাবাও। তিনি বলেন, “সরকার কথা রেখেছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফাঁসি হোক।” অতনুর পরিবার ও প্রতিবেশীরাও অবিলম্বে ধৃতের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। এদিকে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, “অতনুকে খুন করেই গা ঢাকা দেয় সত্যেন্দ্র। তবে কলকাতাতেই ছিল সে। নজর রাখছিল পুলিশের গতিবিধির উপর। তল্লাশি দেখে বুঝতে পেরেছিল, লুকোনো সহজ হবে না। তাই হাওড়া থেকে পালানোর ছক কষে। তদন্তকারীদের চোখে ধুলো দিতে বারবার সিম কার্ড পরিবর্তন করে। ফলে বারবার টাওয়ার লোকেশন অনুযায়ী তাকে ট্র্যাক করা একটু সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হাওড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত ২২ আগষ্ট। ওই দিনই পিসতুতো ভাই অভিষেক নস্করকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবেশী জামাইবাবু সত্যেন্দ্রর সঙ্গে বেরিয়েছিল অতনু দে। দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি দুই কিশোর। স্বাভাবিকভাবেই পরিবারের সদস্যরা খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু লাভ হয়নি। এরপরই ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে মেসেজ যায় অতনুর বাবার কাছে। ২৪ তারিখ পুলিশের দ্বারস্থ হন অতনুর বাবা। ১৪ দিন পর অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হয় ২ কিশোরের দেহ।