সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাত পোহালেই বাংলাদেশে পা রাখবেন খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান। ১৭ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে চলেছেন তিনি। সুদূর লন্ডন থেকে তেমনই বার্তা দিয়েছেন খালেদাপুত্র। কিন্তু কেন এত বছর স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন তিনি, স্বাভাবিকভাবে ক্রমশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে সে প্রশ্ন।
তারেক রহমান খালেদা জিয়া এবং জিয়াউর রহমানের পুত্র। ১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর তাঁর জন্ম। একসময় তাঁকে বিএনপির 'যুবরাজ' তকমা দেওয়া হত। কারণ, তিনি ছিলেন বিএনপিতে খালেদার উত্তরাধিকারী। বিএনপিতেও ক্রমশ গুরুত্ব বাড়ছিল তাঁর। তারেক রহমানের বাবা জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তৃতীয় সেনাপ্রধান। ১৯৭৭ সালে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট। ঠিক তার পরের বছরই বিএনপি- প্রতিষ্ঠা। ১৯৮১ সালের ৩০ মে দুষ্কৃতী হামলায় প্রাণ হারান জিয়াউর। আর খালেদা জিয়া হলে বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। প্রথমবার ১৯৯১ সাল, দ্বিতীয়বার ১৯৯৬ সাল এবং তৃতীয় দফায় ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।
২০০৬ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর কুরসি থেকে সরে যাওয়ার পরই বদলায় পরিস্থিতি। আওয়ামি লিগের শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হন। তারপর দুর্নীতি, আর্থিক তছরুপ, বেআইনি সম্পত্তি এবং গ্রেনেড হামলার মতো একের পর এক অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে উঠতে থাকে। মোট ৮৪টি মামলা দায়ের হয়। একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তারেক। গ্রেপ্তার হন তারেক। প্রায় দেড় বছর জেলেই কাটে তাঁর। ২০০৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পান। যদিও বিএনপির দাবি, গ্রেপ্তারি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে জেলমুক্তির পর আর বাংলাদেশে থাকতে চাননি তারেক। স্ত্রী ও সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডনে চলে যান। সেখান থেকে বিএনপির একাধিক কার্যকলাপে অংশ নেন তারেক। শুধু তাই নয়, মায়ের অসুস্থতার পর বিএনপির কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যানও হন তিনি। অবশেষে গত ১৬ ডিসেম্বর তারেক নিজেই জানান নির্বাচনের আগেই তিনি বাংলাদেশে ফিরছেন। সেই মতো আগামী ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবেন তারেক। বিএনপি নেতা-কর্মীদের উন্মাদনা তুঙ্গে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কি আবার বদল হবে, তারেকের আচমকা প্রত্যাবর্তনে স্বাভাবিকভাবে ক্রমশ জোরাল হচ্ছে সে প্রশ্ন।
