ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: লোকসভা ভোটের বাংলায় সবুজ ঝড়। ২৯ টি আসনে জিতে তৃণমূলের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বেশ কয়েকটি আসনে হার হয়েছে অপ্রত্যাশিতভাবে। শুভেন্দু-গড় কাঁথি, তমলুকে তৃণমূলের জেতা উচিত ছিল বলে মনে করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৪ জুন, ভোটের ফলপ্রকাশের পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেকথা বলেছিলেন তিনি। অন্তর্ঘাত করে এই দুই হারানোর অভিযোগ তুলে পুনর্গণনার দাবিও জানিয়েছিলেন। শনিবার কালীঘাটে দলের জয়ী-পরাজিত প্রার্থী থেকে সংগঠনের নেতা, সকলকে নিয়ে বৈঠকের পরও একই কথা বললেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুরে ভোট লুট হয়েছে বলে দাবি করলেন।
কাঁথি (Contai) আসনটিতে এগিয়ে থেকেও শেষপর্যন্ত বিজেপি প্রার্থী, অধিকারী পরিবারের সদস্য সৌমেন্দু অধিকারীর কাছে হার মানতে হয়েছে তৃণমূলের (TMC) উত্তম বারিককে। তিনি দীর্ঘদিন এলাকায় দক্ষ সংগঠক এবং ভূমিপুত্র বলে পরিচিত। তাঁর জয়ের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। অন্যদিকে, তমলুক (Tomluk) আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরও প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। এই দুই আসনে বিজেপির (BJP) জয়ের নেপথ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আর তাতেই অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ''আরও ৩-৪টি আসন আমরা জিততে পারতাম। পূর্ব মেদিনীপুরে আসন লুট হয়েছে। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, আইসি-দের ভোটের আগে সরিয়ে দিয়েছে। লোডশেডিং করে যে সিট হারিয়ে দিয়েছে, আগে দেখেছি। এর পর দেখব কাকে কী দায়িত্ব দেয় আর গ্যারান্টি বলে যা যা করেছে, সেটা কবে হয়।''
[আরও পড়ুন: কালীঘাটের বৈঠকে সংসদীয় কমিটি সাজালেন মমতা,গুরুত্ব কাকলি-সাগরিকাকে, কে কোন দায়িত্বে?]
মমতার মুখে শোনা গেল বিষ্ণুপুরের কথাও। এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী ছিলেন সুজাতা মণ্ডল। কিন্তু প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে নামমাত্র ভোটের ব্যবধানে হারতে হয়েছে তাঁকে। সুজাতাই একমাত্র মহিলা প্রার্থী, যাঁকে পরাজিত হতে হল। বাকিরা সকলেই জয়ী। তা সত্ত্বেও অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন। সুজাতাকে নিয়ে দলনেত্রীর বক্তব্য, ''অনেক জায়গায় মহিলা পরিচালিত দল আছে। কিন্তু আমাদের ৩৮% মহিলা। একজন হেরেছেন। তাঁকে জোর করে হারানো হয়েছে কমিশনের দয়ায়।'' এই পরাজিত কেন্দ্রগুলিতে সাংগঠনিক স্তরে আরও জোর দিতে হবে বলে এদিনের বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।