স্টাফ রিপোর্টার : এখানে একশো শতাংশ গ্যারান্টি সহকারে সন্তান দেওয়া হয়। আইভিএফ (IVF) সেন্টারের এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে অতীতে। এবার এমনই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে বছর ৬১-র প্রৌঢ়। অভিযোগ জানালেন পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে। সে অভিযোগকে মানবিক দিক দিয়ে বিচার করছে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। অবিলম্বে অভিযোগের মীমাংসার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্যা কোথায়?
আইভিএফ সেন্টার যাই দাবি করুক ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (In Vitro Fertilization) এর চিকিৎসকরাই বলেন, আইভিএফ পদ্ধতিতে একশো শতাংশ সফল হওয়ার ঘটনা সত্যি নয়। আইভিএফ এর ক্ষেত্রে সাফল্যের হার মেরেকেটে ৬০ শতাংশ। ভিট্রো কথাটির অর্থ শরীরের বাইরে। আইভিএফ পদ্ধতিতে শরীরের বাইরে জীবন সৃষ্টি করার পদ্ধতিকে বলে ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন। চলতি কথায় যা টেস্ট টিউব বেবি (Test Tube Baby)। এমনই সন্তান চেয়ে কলকাতা উইমেন ক্লিনিকে এসেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রৌঢ় (৬১)। তাঁর স্ত্রী সরকারি স্কুলে পড়ান। কিন্তু হাইপার টেনশন থাকার কারণে তিনি সন্তান ধারণ করতে চান না।
[আরও পড়ুন: এক মাসে দ্বিতীয়বার, ১২ দিনের মাথায় ফের বাড়ল রান্নার গ্যাসের দাম]
প্রৌঢ়ের অভিযোগ, ওই আইভিএফ সংস্থা তাঁকে জানায়, এখানে একশো শতাংশ গ্যারান্টি সহকারে সন্তান লাভ সম্ভব। ঠিক হয়, প্রৌঢ়ের শুক্রাণু নিয়ে অন্য এক মহিলার গর্ভে প্রবেশ করানো হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যা ট্র্যাডিশনাল সারোগেসি (Traditional Surrogacy)। এই পদ্ধতির মাধ্যমে বাবা হবেন তিনি। সবই ঠিক চলছিল। সন্তানসম্ভবাও হন সারোগেট মাদার। কিন্তু ১৪ সপ্তাহে অ্যানোমেলি স্ক্যান করে দেখা যায় মায়ের গর্ভে বাচ্চাটি বিকলাঙ্গ। বিকলাঙ্গ সে সন্তান ভূমিষ্ঠ করতে গররাজি হন প্রৌঢ়। তাঁর সম্মতি নিয়েই আইন অনুযায়ী গর্ভপাত করা হয় মায়ের।
এরপরই বাধে সমস্যা। প্রৌঢ়ের অভিযোগ গোটা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছিল ওই সংস্থা। কথা দিয়েছিল গ্যারান্টি সহকারে সুস্থ সন্তান দেওয়া হবে। তা যখন হয়নি তখন ওই টাকা ফেরত চান তিনি। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই মানবিক কারণে ৭০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে ওই আভিএফ সংস্থা। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগটা অত্যন্ত গুরুতর। স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করার।
[আরও পড়ুন: গরুপাচার কাণ্ডে স্বেচ্ছায় সিবিআই হাজিরা, নিজাম প্যালেসে অনুব্রত]
এদিকে সময় উত্তীর্ণ ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কমিশনের কোপে অলোকা মেডিকেয়ার। ভবানীপুর ডোভার টেরাসের বেসরকারি এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মা বাবাকে নিয়ে গিয়েছিলেন মণীশ ঝুনঝুনওয়ালা। যে কোভিড ভ্যাকসিন তাঁর মা বাবাকে দেওয়া হয় তা সময় উত্তীর্ণ। মণীশের অভিযোগ, ভ্যাকসিনের ভায়ালের গায়ে লেখা ছিল এক্সপেয়ারি ডেট ৫ ফেব্রুয়ারি। অথচ ২৬ মার্চ সেই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে তাঁদের। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সেই ভায়াল আটক করেছে।
স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভবানীপুর থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাজেয়াপ্ত ভায়াল স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানোর জন্য। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।