সুদীপ রায়চৌধুরী: সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সৃষ্ট 'বন্দে মাতরম' গানের দেড়শো বছর উদযাপন ঘিরে একাধিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংসদে এনিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'বঙ্কিমদা' সম্বোধন থেকেই সেই বিতর্কের সূত্রপাত। সর্বস্তরে এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল। এবার সেই বঙ্কিম আবেগে শান দিয়ে বাংলার রাজ্যপাল বড়সড় সিদ্ধান্ত নিলেন। লোকভবনের একটি দ্বারের নামকরণ করলেন বঙ্কিমচন্দ্রের নামে। দক্ষিণ-পশ্চিম গেটের নাম হতে চলেছে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে।এ এছাড়া বছরভর 'বন্দে মাতরম'কে শ্রদ্ধা জানাতে একাধিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও করেছেন সিভি আনন্দ বোস।
শুক্রবার লোকভবনের তরফে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গিয়েছে, শনিবার সেখানে 'বন্দে মাতরম' স্মরণে 'নিত্যশিখা'র সূচনা করবেন রাজ্যপাল। একইসঙ্গে লোকভবনের দক্ষিণ পশ্চিম দ্বারের নামকরণও হবে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে। সাহিত্যসম্রাটের অমর কীর্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে আগেই লোকভবনে এই সংক্রান্ত বিষয় গবেষণা, উচ্চশিক্ষা, সেমিনার, কর্মশালা ও লেখা প্রকাশের জন্য আলাদা ব্যবস্থার কথা জানানো হয়েছিল। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চাকে আরও উৎসাহিত করতে লোকভবনের তরফে 'বন্দে মাতরম' পুরস্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন সিভি আনন্দ বোস।
বছরভর 'বন্দে মাতরম' গানের সার্ধ্ব শতবর্ষ উদযাপনে একাধিক অনুষ্ঠানের জন্য একটি কোর কমিটি গড়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। কোর কমিটির নেতৃত্ব দেবেন ড. এস কে পট্টনায়েক। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্যান্ডেল, চুঁচুড়া অর্থাৎ বঙ্কিমচন্দ্রের কর্মস্থলগুলিতে বিশেষভাবে উদযাপন করা হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমবেত কণ্ঠে 'বন্দে মাতরম' গাওয়া, এশিয়াটিক সোসাইটি ও মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজের তরফে একযোগে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সময়কার ইতিহাস প্রদর্শনীর মতো অনুষ্ঠান চলবে। এতে যৌথভাবে উদ্যোগী আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, অ্যানথ্রোপলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল লাইব্রেরি ছাড়া বাংলার বেশ কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, বঙ্কিমচন্দ্র নিয়ে বিজেপির হাজারটা ত্রুটি-বিচ্যুতির ড্যামেজ কন্ট্রোলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের এই পদক্ষেপ। কারণ, শাসকশিবির তাঁকে বিজেপির প্রতিনিধি বলেই বারবার দাগিয়ে দিয়েছে।
