অরিঞ্জয় বোস: নিজেই এক ইতিহাসের সাক্ষী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল (Victoria Memorial)। এর অন্দরে-বাহিরে অতীত দিনের কাহিনি যেন কথা কয়। সেসব ইতিহাসই তুলে ধরা হয় ভিক্টোরিয়ার লাইট অ্যান্ড সাউন্ড (Light and Sound) শো’র মাধ্যমে। কিন্তু দিন বদলেছে। আজকের যুগ প্রযুক্তির যুগ। স্রেফ আলো আর শব্দের খেলায় তেমন জীবন্ত হয় না ইতিহাস। ভাল নাও লাগতে পারে দর্শকদের। তাই ভিক্টোরিয়াও শো’য়ের ধরন বদলাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ইতিহাসের আরও কাছাকাছি দর্শকদের নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার, ২০ নভেম্বর থেকে এখানে চালু হচ্ছে ‘প্রোজেকশন ম্যাপিং'(Projection Mapping)। আরও উল্লেখ্য, বাংলার হাত ধরেই এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি পথচলা শুরু করছে আমাদের দেশে।
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ব্রিটিশ শাসিত কলকাতার বুকে স্মৃতিসৌধ হিসেবে গড়ে উঠেছিল শ্বেতপ্রাসাদ – ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। ইতিহাস বলছে, ১৯০৬ সাল থেকে ১৯২১ – এই পনেরো বছর ধরে তিলে তিলে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে স্মৃতিসৌধ। এর প্রতিটি ইটে যেন লেখা শত শত মানুষের রক্তজল করা পরিশ্রমের করুণ কাহিনি। ইতিহাসপ্রেমী মানুষ তো সেসব ছুঁতে চান। মনে হয়, যদি এক লহমায় ফিরে যাওয়া যেত শতবর্ষ আগে। কিন্তু বাস্তবে তাও তো সম্ভব নয়। সত্যিই কি সম্ভব নয়? প্রযুক্তির উন্নতিতে এখন তো হাতের মুঠোয় অনেক কিছুই। তবে কেন অতীত সময়ে বিচরণ করা যাবে না?
[আরও পড়ুন: ‘ওঁরা চিরকালই দেশদ্রোহী’, BSF ইস্যুতে অপর্ণা সেনকে কটাক্ষ দিলীপের]
উৎসাহী মানুষজনের এই খিদে বোধহয় মিটিয়ে দেবে ‘প্রোজেকশন ম্যাপিং’। কীভাবে কাজ করে এই প্রযুক্তি? জানা গেল, সাধারণ প্রোজেক্টরে ছবি দেখানো হয় সমতল পর্দার উপর। কিন্তু অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তিতে পর্দা হিসেবে ব্যবহার করা যায় যে কোনও সামগ্রী। আর ভিক্টোরিয়ায় এই প্রযুক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে গোটা প্রাসাদটিই পর্দা। অর্থাৎ ভিক্টোরিয়ার গায়েই ফুটে উঠবে ইতিহাস। কম চমকপ্রদ নয় কিন্তু। দেশে এই প্রথম ‘প্রোজেকশন ম্যাপিং’য়ের মাধ্যমে কোনও স্মৃতিসৌধে দেখানো হবে শো।
ভিক্টোরিয়া সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধ্যায় এই নতুন শো’র সূচনা হবে। প্রতি বুধ, শনি ও রবিবার শো হবে। আরও জানা গিয়েছে, বাংলা, ইংরাজি, হিন্দি তে ২টি শো দেখা যাবে। একটি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনীর উপর, বাকি দুটি স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং কলকাতার ইতিহাসের উপর শো হবে। নতুন ধরনের প্রযুক্তির মধ্যে দিয়ে এবার ভিক্টোরিয়ার শ্বেতগাত্রেই প্রত্যক্ষ করতে পাবেন ইতিহাস।