shono
Advertisement

চাকরিপ্রার্থীদের চোখের জলের জন্য দায়ী পার্থ, আদালতে সওয়াল ইডির আইনজীবীদের

৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেলেই পার্থ-অর্পিতা।
Posted: 04:48 PM Sep 28, 2022Updated: 08:21 PM Sep 28, 2022

অর্ণব আইচ: যে কোনও শর্তে জামিনের আবেদন জানিয়েছিসেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বললেন, “প্রয়োজনে আমাকে বাড়িতে বন্দি করে রাখুন।” জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবীরা বললেন, চোখের জলে জামিনের আরজি জানিয়েছিলেন আগেও। কিন্তু ওঁর জন্য যে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর চোখে জল এসেছে? সেই দাম কে দেবে? এদিনও আদালতে কাঁদলেন অর্পিতা। তবে জামিন মেলেনি। উৎসবের মরসুমে জেলেই কাটাকে হবে পার্থ-অর্পিতাকে। আগামী ৩১ অক্টোবর ফের আদাতে পেশ করা হবে তাঁদের।

Advertisement

১০০ কোটি নয়, ‘অপা’র দুর্নীতি ১৫০ কোটির গণ্ডি ছড়িয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির সাম্প্রতিক তদন্তে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে আরও দু’টি ভুয়ো সংস্থার হদিশ পাওয়া গিয়েছে। বুধবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জানাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) আইনজীবী। তাঁদের দাবি, তদন্তে নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। 

নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত দু’ জনকে এদিন ভারচুয়ালি আদালতে পেশ করেছিল ইডি। যে কোনও মূল্যে জামিনের আরজি জানান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ। অন্যদিকে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়ার আরজি জানান তাঁর সঙ্গী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। প্রভাবশালী তত্ত্বে পার্থর জামিনের বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবীরা। তবে অর্পিতার আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন করেননি। এদিন আদালতে পার্থ বলেন, “যে কোনও মূল্য়ে আমাকে জামিন দেওয়া হোক। প্রয়োজনে ঘরে বন্দি রাখা হোক।” বয়স এবং ভগ্নস্বাস্থ্যের যুক্তি দিয়েও জামিনের আবেদন জানান তিনি। পার্থর দাবি, তাঁর চিকিৎসার জন্য যে ধরনের পরিকাঠামো প্রয়োজন তা জেলে নেই।

[আরও পড়ুন: আরও দু’দিন গ্রেপ্তার করতে পারবে না CBI, সুপ্রিম কোর্টে বাড়ল মানিক ভট্টাচার্যর রক্ষাকবচের মেয়াদ]

এদিন পার্থর আইনজীবীও জামিনের পক্ষে যুক্তি দেন। বলেন, ”চার্জশিট দেওয়া হয়ে গিয়েছে। আর তদন্ত হবে না। আর প্রমাণ বা সাক্ষ্য নষ্টের সুযোগ নেই। তাই জামিন দেওয়া হোক। যখনই ডাকবে, তখনই যাবেন আমার মক্কেল। তদন্তে সমস্তরকম সহযোগিতা করবেন। গত ১০-১৫ দিন কোনও জিজ্ঞাসাবাদ হয়নি। উনি তো এখন প্রভাবশালী নন। দলে কোনও পদ নেই।”

তাঁদের এই যুক্তি শুনে বিচারপতি জানতে চান, ”পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কি দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে?” উত্তরে আইনজীবীরা জানান, ”না, ওঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।” সাসপেনশনের নথি চায় আদালত। আইনজীবীরা জানান, ”নথি রয়েছে। দেওয়া হবে।” অর্পিতা মুখোপাধ্যায় পার্থ ঘনিষ্ঠ, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কোনও নথিতেও দেখা যায়নি।

ইডির আইনজীবীদের দাবি, ”শেষবারও উনি (পার্থ চট্টোপাধ্যায়) চোখের জলে জামিনের আরজি জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওঁর জন্য যে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর চোখে জল এসেছে? পুজোতেও প্রিয় মানুষদের কাছে ফিরতে পারবেন না, তার দায় কার?”

সাম্প্রতিক তদন্তে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসছে বলেও দাবি করেছেন ইডির আইনজীবীরা। তাঁরা আরও জানান, বাবলি চ্যাটার্জি ফান্ডের খবর আগেই পাওয়া গিয়েছিল। এবার বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। যার মাধ্যমে পাটুলিতে ১৮ কাঠার জমি কেনা হয়েছিল। পার্থর মেয়ে হচ্ছেন চেয়ারপার্সন এবং জামাই হচ্ছেন ট্রাস্টি। তাদের আরও দাবি, দুর্নীতির টাকা গিয়েছে পার্থ-অর্পিতার পরিবারে। প্রতিদিন ৩০-৪০ কোটির নতুন সম্পত্তি উদ্ধার হচ্ছে বা খবর পাওয়া যাচ্ছে। 

[আরও পড়ুন: পর্যাপ্ত নথির অভাব, বোলপুর পুরসভার অনুদান মামলায় হাই কোর্টে স্বস্তিতে অনুব্রত]

এদিন বিচারপতি জানান, এটা সাধারণ মামলা নয়। অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া আছে। এটা বিরল থেকে বিরলতম মামলা। তাই জামিন কে পাবেন, কে পাবেন না, তা একান্ত আদালতের সিদ্ধান্ত। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement