অর্ণব আইচ: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ফের জেল হেফাজত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ আলিপুর আদালতের। পার্থ ছাড়া জেলেই থাকতে হবে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এসপি সিনহা-সহ বাকি ছ’জনকে। আগামী ২৮ নভেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে তাঁদের।
জেল হেফাজত শেষের পর সোমবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ (Partha Chatterjee) শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত সাতজনকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়। প্রথম থেকে জামিনের আবেদন করেন ধৃতের আইনজীবীরা। তবে সেই আবেদন খারিজ করার দাবিতে সরব হন সিবিআইয়ের আইনজীবী। যুক্তি হিসাবে বলা হয়, পরীক্ষায় চার নম্বর যিনি পেয়েছেন মেধাতালিকায় দেখানো হয়েছে তিনি ৫৪ পেয়েছেন। টাকার বিনিময়ে দুর্নীতি করা হয়েছে। সিবিআইয়ের আইনজীবী তাতে সম্মতি জানান। তখনই বিচারক প্রশ্ন করেন, তাহলে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, অযোগ্য সত্ত্বেও যারা চাকরি পেয়েছে এরকম মোট ৬৭৭ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। গ্রুপ সি-তে মোট ৩৮৫ জনের মধ্যে ৪৫ জন ভুয়ো চাকরিপ্রার্থীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। মূলত ওই প্রার্থীরা উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের। ওই ৪৫ জনকে নোটিসও পাঠানো হচ্ছে। ১০ নভেম্বর থেকে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘পর্ষদের প্রকাশ করা নয়’, ২০১৪ টেট তালিকায় রাজনীতিকদের নাম নিয়ে দাবি পর্ষদ সভাপতির]
তবে তাতে বিরক্ত হন পার্থর আইনজীবী। তিনি জানান, যতদিন জেরা করা হবে, ততদিন আমার মক্কেল (পার্থ চট্টোপাধ্যায়) ভিতরে থাকার দরকার রয়েছে? অনন্তকাল ধরে কি জেলে থাকবেন? সুবীরেশ ভট্টাচার্যের আইনজীবী উষ্মাপ্রকাশ করেন। সিবিআইয়ের লোক কম তো কী করা যাবে? ৪ মাসে ৪ জনকে জেরা করেছে। তার মানে প্রতি মাসে গড়ে ১ জন করে জেরা করা হয়েছে। তাহলে ৬৭৭ জনকে কতদিনে জেরা করা হবে? তবে সিবিআইয়ের (CBI) আইনজীবীর তরফে সাফ উত্তর, “প্রতিদিন তদন্ত একটু একটু করে এগোচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিবিআই বসে নেই।”
উল্লেখ্য, কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে শিক্ষক নিয়োগ মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত জুলাই মাসে গ্রেপ্তার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, প্রাক্তন মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও (Arpita Mukherjee)। তাঁর দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। এছাড়া সোনার গয়নাগাটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। এরপর একে একে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এসপি সিনহা-সহ একাধিক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হন। তাদের কাছ প্রতিনিয়ত নানা তথ্য হাতে আসছে বলেই দাবি তদন্তকারীদের।