অর্ণব আইচ: বয়স ভাঁড়ানোর জন্য জাল শংসাপত্র। আসল জন্ম শংসাপত্র থাকার পরও শুধু বয়স ভাঁড়িয়ে তৈরি হচ্ছে জাল জন্ম শংসাপত্র। আর তার উপর ভিত্তি করেই তৈরি হচ্ছে সেই ব্যক্তির যাবতীয় ভারতীয় পরিচয়পত্র, এমনকী, পাসপোর্টও। এমনই অভিযোগ এসেছে পুলিশের হাতে। দিল্লিতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর এই ধরনের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, আসল জন্ম শংসাপত্র থাকার পরও জাল জন্ম শংসাপত্র কেন ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে চলছে তদন্ত।
সম্প্রতি পুলিশের কাছে অভিযোগ এসেছে, আসল জন্ম শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও জন্ম শংসাপত্র ব্যবহার করে মধ্য কলকাতার জোড়াসাঁকোর বাসিন্দা এক যুবকের যাবতীয় পরিচয়পত্র, এমনকী, পাসপোর্টও তৈরি করে তাঁর পরিবার। এই অভিযোগ উঠে আসার পর তাতে সিলমোহর দেয় কলকাতা পুরসভাও। পুরসভার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই জন্ম শংসাপত্রটিই জাল। এই ব্যাপারে নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এমনকী, পুলিশের কাছে এমনও অভিযোগ যে, ওই যুবকের বোনও একই পদ্ধতিতে জাল জন্ম শংসাপত্র তৈরি করে তারই ভিত্তিতে ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়েছেন। এই ব্যাপারে আগেও নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। একই পরিবারের দু’জন কীভাবে জাল জন্ম শংসাপত্র তৈরি করানো হল, তার কারণই বা কী, তা নিয়ে শুরু হয়েছে পুলিশের তদন্ত। কলকাতা পুলিশের কাছে এই অভিযোগ এলেও বিভিন্ন জেলায়ও জাল জন্ম শংসাপত্র নিয়ে বয়স ভাঁড়ানো হয়েছে বলে পুলিশের কাছে খবর। ইতিমধ্যে পুলিশ দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবায় ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরির বড় চক্রের সন্ধানও পেয়েছে।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগ অনুযায়ী জোড়াসাঁকো থানা এলাকার রবীন্দ্র সরণির বাসিন্দা ওই যুবকের জন্ম হয় ২০০১ সালে। ওই বছরের জুলাই মাসে তাঁর জন্ম বলেই প্রথম জন্ম শংসাপত্র তৈরি হয়। ওই শংসাপত্রটিই আসল বলে পুলিশের কাছে দাবি। কিন্তু কার্যত দেখা গিয়েছে, ওই যুবক যখন মধ্য কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি হন, তখন তাঁর পরিবার ২০০২ সালের ১৫ জুলাইয়ের একটি জন্ম শংসাপত্র ওই স্কুলে জমা দেন। ক্রমে ওই জন্ম শংসাপত্রের ভিত্তিতে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড ও জন্ম শংসাপত্র তিনি পান। এর পর ওই জন্ম শংসাপত্রের ভিত্তিতে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও অন্যান্য যাবতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন। ওই শংসাপত্রের ভিত্তিতে তিনি পাসপোর্টও বানিয়ে ফেলেন। শুধুমাত্র ছেলে ও মেয়ের বয়স ভাঁড়ানো কি ওই পরিবারের উদ্দেশ্য ছিল, না কি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যুবককে তলব করে জেরা করা হচ্ছে।
