shono
Advertisement
Kolkata

উত্তুরে হাওয়ায় নেই জোর, কলকাতায় বাড়ছে দূষণ

প্রাতঃভ্রমণ এড়িয়ে যেতে বলছেন চিকিৎসকরা।
Published By: Sayani SenPosted: 08:47 AM Dec 15, 2025Updated: 08:47 AM Dec 15, 2025

স্টাফ রিপোর্টার: শহরে শীতের ঘাটতি থাকায় দূষণমাত্রা বাড়ছে। ভোরের দিকে বাতাস হয়ে উঠছে অস্বাস্থ্যকর। এমনটাই দাবি পরিবেশবিদদের। দক্ষিণবঙ্গে জেলায় জেলায় শীতের কামড় চলছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো পশ্চিমি জেলায় ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থা। কলকাতায়ও শীতের ভরপুর আমেজ মিলছে। কিন্তু শহরে এই শীত পর্যাপ্ত নয়। পরিবেশবিদ ড. স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, কলকাতায় শীতের আমেজ মিলছে ঠিকই। তবে সেটা পর্যাপ্ত নয়। ডিসেম্বরে যে কনকনে ঠান্ডা এখনও অধরা। তার উপরে উত্তুরে হাওয়ার সেই জোর নেই। ফলে বাতাসে ধূলিকণা জমছে বেশি।

Advertisement

বিশেষ করে যেসব এলাকায় যানবাহনের চাপ বেশি রয়েছে সেই সব এলাকার বাতাস আরও অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। শীতে শুষ্ক আবহাওয়ার জেরে ধূলিকণার পরিমাণ একটু বেশি থাকে। কিন্তু কলকাতায় এবার ধূলিকণার পরিমাণ অনেকটা বেশি। বিশেষ করে ভিক্টোরিয়া, ময়দান এলাকায় বাতাসের স্বাস্থ্য ভালো নেই। ভোরেই ভিক্টোরিয়া, ময়দান এলাকায় বাতাসের গুণমান সূচক ১৪৬-এ পৌঁছে যাচ্ছে। স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানান, ভোরে শহরে কুয়াশা যে দেখছি, সেগুলি আসলে ধোঁয়াশা। ধূলিকণা জমে ওই ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। উত্তুরে হাওয়ায় জোর থাকলে এই ধূলিকণাগুলি সরতে থাকে। উত্তুরে হাওয়ায় জোর না থাকায় কিন্তু জোর না থাকায় ধূলিকণাগুলি একটা এলাকায় থমকে থাকছে। শীতে শিশিরের সঙ্গে ধূলিকণাগুলি জুড়লে ওই এলাকার বাতাস পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু শীতের খামখেয়ালিপনায় এখন শিশিরও সেভাবে পড়ছে না।

দিল্লির দূষণমাত্রা ৩০০-র উপর। সেই তুলনায় কলকাতার দূষণ কম থাকলেও সেটা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি। সাধারণত কলকাতায় বাতাসে গুণমান সূচক ৭০ থেকে ৮০ পর্যন্ত ভালো রা হয়। পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, সেক্ষেত্রে শহরে সারাদিনে ২৫০ একিউআই ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের পালমোনারি মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ডা. সুস্মিতা কুণ্ডু জানিয়েছেন, খুব ভোরে শীতে প্রাতঃভ্রমণে না বেরনোই শ্রেয়। তাঁর কথায়, 'শীতকালে খুব ভোরে মাটির কাছে বাতাস ঠান্ডা ও ভারী হয়ে থাকে। ফলে দূষণকণা উপরে উঠতে পারে না। ঘন কুয়াশা দূষণকণাকে ধরে রাখে। এছাড়াও শীতে বেশি করে কাঠকয়লা পোড়ানো হয়। সব মিলিয়ে ভোরের বাতাসে ক্ষতিকারক দূষণকণার পরিমাণ থাকে মাত্রাছাড়া।

চিকিৎসকের পরামর্শ ভোর পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটায় প্রাতঃভ্রমণে না বেরিয়ে একটু পরে বেরনো শ্রেয়। সকলকে ভোরে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। সামান্য একটু রোদ ওঠার পরে প্রাতঃভ্রমণে বেরোতে বলেছেন ডা. সুস্মিতা কুণ্ডু। পরিবেশবিদ সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ জানান, রবীন্দ্র সরোবরের মতো জায়গায় এখন দুষণমাত্রা লাগামছাড়া। এই অঞ্চলে সকালে বর্জ্য পোড়ানো হচ্ছে। লেক চত্বরে দোকান বেড়েছে। ফলে দূষণ বাড়ছে। মেট্রোর কাজের জন্য ওদিকে ভিক্টোরিয়া ময়দান অঞ্চলে দূষণমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর কথায়, সন্ধে থেকে ভোর পর্যন্ত দূষণমাত্রাটা বেড়ে যাচ্ছে। শীতে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে। কিন্তু রাতে শিশিরকণায় ওই ধূলিকণাগুলি জলে পরিণত হয়ে যায়। এখন শিশির সেইভাবে পড়ছে না। ফলে ধূলিকণাগুলি জমাট বেধে ধোঁয়াশা তৈরি করছে। এই ধোঁয়াশা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বহু মানুষ এই ধোঁয়াশার মধ্যে ভোরে প্রাতঃভ্রমণ করতে আসছেন। এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। ভোরের বাতাসে দূষণমাত্রা থাকায় প্রাতঃভ্রমণ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • শহরে শীতের ঘাটতি থাকায় দূষণমাত্রা বাড়ছে।
  • ভোরের দিকে বাতাস হয়ে উঠছে অস্বাস্থ্যকর। এমনটাই দাবি পরিবেশবিদদের।
  • প্রাতঃভ্রমণ এড়িয়ে যেতে বলছেন চিকিৎসকরা।
Advertisement