অভিরূপ দাস: করোনা ভাইরাস (CoronaVirus) নিয়ে ব্যতিব্যস্ত গোটা বিশ্ব। সংক্রমিতের সংখ্যা, তা রুখতে জারি হওয়া নানা বিধিনিষেধে প্রায় বিরক্ত বেশিরভাগ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে নয়া আতঙ্ক সাইটোমেগালো ভাইরাস। শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকা এই ভাইরাস আচমকাই হয়ে উঠছে প্রাণঘাতী। আর তার ফলে ক্রমশই বিপদ বাড়ছে করোনা রোগীদের। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা কলকাতাতেও মিলেছে সাইটোমেগালো ভাইরাসে আক্রান্তের হদিশ।
জানা গিয়েছে, কলকাতার (Kolkata) বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে ইতিমধ্যে বহু করোনা জয়ীর শরীরে সাইটোমেগালো ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। সংখ্যাটা ১১ হবে। তাঁদের মধ্যে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক সোহম মজুমদার নিজে সাইটোমেগালো ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা করেছেন। যদিও রোগীর মৃত্যুর পর বুঝতে পেরেছেন তাঁদের শরীরে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস জেগে উঠেছিল। চিকিৎসকের মতে, শুধু ১১ জনই নন। এই ধরনের ভাইরাসে আক্রান্তের হদিশ অনেকের শরীরেই পাওয়া যেতে পারে। সঠিক পরীক্ষা নিরীক্ষার অভাবে হয়তো সঠিক সময়ে রোগীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। কারণ, শুধুমাত্র রক্তের ডিএনএ (DNA) পরীক্ষার মাধ্যমে এই ধরনের ভাইরাস আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায়। এই ধরনের পরীক্ষা করতে খরচ হয় চার-পাঁচ হাজার টাকা। তবে সমস্ত ডায়গনাস্টিক সেন্টারে এই পরীক্ষা না হওয়ায় রোগীর চিহ্নিতকরণেই সময় লেগে যায় অনেক বেশি। তার ফলে বাড়তে থাকে প্রাণহানির সম্ভাবনা।
[আরও পড়ুন: প্রৌঢ়কে নতুন জীবন দিল Robot! খাস কলকাতাতেই যন্ত্রমানবের হাতে কিডনি প্রতিস্থাপন]
একজন করোনা রোগী কীভাবে বুঝবেন তাঁর শরীরে সুপ্ত সাইটোমেগালো ভাইরাস (Cytomegalovirus) আচমকা জেগে উঠেছে? চিকিৎসক সোহম মজুমদারের মতে, অতিরিক্ত জ্বর এই ভাইরাস জেগে ওঠার লক্ষ্মণ। এছাড়া কোলন আলসার এবং আচমকা রক্তক্ষরণও শরীরে সাইটোমেগালো ভাইরাস জেগে ওঠার উপসর্গ। এখন প্রশ্ন হল, ঠিক কী কারণে আচমকা শরীরে জেগে ওঠে সাইটোমেগালো ভাইরাস? চিকিৎসকের মতে, আমাদের সকলের শরীরেই সুপ্ত অবস্থায় এই ভাইরাস রয়েছে। তবে করোনার পর শরীর দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। কমছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আর সেই সুযোগেই শরীরে জেগে উঠছে সাইটোমেগালো ভাইরাস। তাই করোনা জয়ীদের এই মুহূর্তে অনেক বেশি সাবধান হওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের। কোনও উপসর্গ দেখা দিলে তড়িঘড়ি চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথাও বলছেন বিশেষজ্ঞরা।