shono
Advertisement

চড়চড়িয়ে বাড়ছে আলুর দর, আমজনতা হেঁশেলে আগুন

তিন-চারদিনে আরও বাড়তে পারে আলুর দাম।
Posted: 01:48 PM May 05, 2022Updated: 03:28 PM May 05, 2022

নব্যেন্দু হাজরা: ভোজ্য তেল, মাছ-মাংস, আনাজপাতির দাম আগেই বেড়েছে। শেষ সম্বল ছিল আলুসেদ্ধ ভাত। তাও আর পাতে পড়ার জো থাকছে না। চন্দ্রমুখী থেকে জ্যোতি, পোখরাজ, এস ওয়ান সব আলুর দামও (Potato Price) ক্রমশ বাড়ছে। চন্দ্রমুখী এমন খেলছে যে হাফ সেঞ্চুরি করা সময়ের অপেক্ষা। পাল্লা দিচ্ছে জ্যোতিও। হিমঘর, আড়তদার, বাজারের আলু বিক্রেতাদের কাছে খোঁজ নিয়ে বুধবার যা জানা গেল, তা পিলে চমকে দেওয়ার মতো। তাঁদের কথায়, আলুর খেলা সবে তো শুরু!

Advertisement

খুচরো বাজারে বুধ-বৃহস্পতিবার মোটের উপর চন্দ্রমুখী আলু বিকিয়েছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা প্রতি কেজিতে এবং জ্যোতি ২৪ থেকে ২৫ টাকা। বাজারভেদে পোখরাজ, এস ওয়ান দু’এক টাকা কম। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, দাম আরও বাড়বে। শীতকালে এবার নাগাড়ে বৃষ্টির কারণে আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে বীজ জমিতে ফেলা হয়েছিল অক্টোবর—নভেম্বরে বৃষ্টিতে তা পচে যায়। ফলে আলু চাষ করতে খরচ অনেকটাই বাড়ে। বহু চাষি দ্বিতীয়বার চাষই করেননি। যাঁরা করেছেন, তাঁদের ঘর থেকেই আলু বিক্রি হচ্ছে অনেক বেশি দামে। আলু ব্যবসায়ীদের কথায়, এখনও যে আলু বাজারে বিকোচ্ছে তা সরাসরি চাষিদের থেকে আনা। সেই আলু বাছাই হচ্ছে না। তাই পচাও বেরোচ্ছে। কিন্তু দিন তিন-চার পর যে আলু বাজারে উঠবে, সেগুলো হিমঘরের। ফলে হিমঘর ভাড়া, শ্রমিকের মাইনে, পরিবহণ খরচ—বাবদ কেজিপিছু পাঁচ থেকে ছ’টাকা দাম বাড়বে। তাই চন্দ্রমুখী ৪০, জ্যোতি ৩০ টাকা পার হতে পারে।

[আরও পড়ুন: হাঁসখালি কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারকে দিতে হবে ১ কোটি টাকা, হাই কোর্টে আরজি আইনজীবীর]

মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের কথায়, “আলু মূলত শীতকালে ফলে। সেই সময় অত্যধিক বৃষ্টির কারণে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের দ্বিতীয়বার চাষ করতে হওয়ায় খরচ বেড়েছে। তাই দাম বেশি। এতদিন ‘কাঁচা’ আলু, মানে চাষিদের থেকে সরাসরি আলু বাজারে এসেছিল। ১ মে থেকে রাজ্যের হিমঘর খুলে গিয়েছে। সেখানকার আলু বাজারে এলে তার দাম আরও বাড়বে।”

 

রাজ্যে প্রতিবছর এক কোটি ১০ লক্ষ মেট্রিক টন মতো আলুর ফলন হয়। এবার কমে ৮০ লক্ষ টন মতো হয়েছে। যার মধ্যে রাজ্যের ৪৬৬টি হিমঘরে ৬৩ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে। অন্যবার থাকে ৭২ লক্ষ টন। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এই ফলন কম হওয়া একটা বড় কারণ। আলুচাষিরা জানাচ্ছেন, ফলন কমায় আলু রপ্তানি কমে যাবে। কিন্তু মূল সমস্যা, আলু চাষে খরচ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।

 

চাষিদের কাছ থেকে হিমঘরে এবার জ্যোতি আলু ঢুকেছে ১৮ টাকা কেজিতে। আর চন্দ্রমুখী ২৫ টাকা। সেই আলু যখন হিমঘর থেকে বেরোনো শুরু করছে, তার দাম ৬ থেকে ৭ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। হিমঘর ভাড়া থেকে শ্রমিকের মজুরি, আলু বাছাই- সবই যুক্ত হচ্ছে। হিমঘর থেকে চন্দ্রমুখী আলুর বাজারে রওনা দেওয়ার সময়ই দাম হয়ে যাচ্ছে ৩০—৩২ আর জ্যোতির ২৫ টাকা। পরিবহণ খরচ ও অন্যান্য খরচ নিয়ে পাইকারি বাজার ঘুরে আলু যখন খুচরো বাজারে আসবে তখন চন্দ্রমুখীর দাম ৩৮—৪০ এবং জ্যোতির ৩০—৩২ টাকা হয়ে যাবে।

[আরও পড়ুন: ৬ বছর পর রাজ্যে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ, বিজ্ঞপ্তি দিল SSC]

চাষিদের কথায়, শীতকালে বৃষ্টির কারণে আলুতে জোলো ভাব থাকায় পচন ধরছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, “চাষিদের থেকেই এবার আলু বেশি দামে হিমঘরে ঢুকেছে। যে কারণে হিমঘরের আলু বাজারে যেই আসা শুরু করবে, তার দাম এক লাফে বেড়ে যাবে। প্রচুর আলু পচে গিয়েছে। সেগুলো যখন বাজারে আসার আগে বস্তা থেকে বাদ যাবে, তার দাম বাড়বেই।” ওয়েস্টবেঙ্গল ভেন্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কোলে মার্কেটের সভাপতি কমল দে বলেন, “বৃষ্টিতে ক্ষতির কারণেই এবার আলুর দামটা বেশি। এখনই কমার কোনও সম্ভাবনা নেই।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement