ফারুক আলম, বিধাননগর: লিওনেল মেসির যুবভারতী সফর (Lionel Messi at Yuva Bharati) পরিণত হয়েছিল বিশৃঙ্খলায়। আর্জেন্তিনীয় ফুটবলারকে ভালোভাবে দেখতে না পেয়ে মাঠে নেমে পড়েন উন্মত্ত জনতা। গ্যালারির সিট ভেঙে ছুড়ে ফেলতে থাকেন মাঠের ভিতরে। ভেঙে দেওয়া হয় প্লেয়ারদের টানেল, ক্যানোপি। অবশেষে ক্ষতিগ্রস্ত যুবভারতীর সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ার পথে। তবে সেই টাকা কি মূল আয়োজক শতদ্রু দত্ত দেবেন, তা নিয়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন রয়েই গিয়েছে।
মেসির সফরে বিশৃঙ্খলার পর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ক্রীড়া সচিব রাজেশ সিনহা প্রমুখ যুবভারতী পরিদর্শনে যান।
স্টেডিয়ামের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, পূর্ত দপ্তরকে তার পরিমাণ জানার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, নবান্নকে একটি রিপোর্ট দিয়েছে পূর্ত দপ্তর। নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকরা সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পূর্ত দপ্তরকে সংস্কারের কাজে হাত দিতে বলেন। মনে করা হচ্ছে, আগামী বছরের শুরুতেই সংস্কারের কাজ শুরু হতে পারে। আসলে যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী কর্তৃক তৈরি করে দেওয়া কমিটি তদন্ত করেছে, তাই সেই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংস্কারে হাত দেওয়া সম্ভব ছিল না। সেই কমিটি সমস্ত প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করার পরই স্টেডিয়ামের মেরামতির কাজ শুরুর ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন ক্রীড়া দপ্তরের অধীনে। যে দপ্তর এখন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। অন্যদিকে স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো সংক্রান্ত সব কাজ (Yuva Bharati Renovation) পূর্ত দপ্তরই করে থাকে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার দায়িত্বও তাদের হাতে ছিল। ফলে সংস্কারের কাজ খুব দ্রুত শেষ করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। সেটা হল এই সংস্কারের কাজ কি মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত দেবেন? তিনি বর্তমানে জেল হেফাজতে। রবিবার বিধাননগর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় শতদ্রুকে। সেখানে তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন সরকারি আইনজীবী। তিনি জানান, টিকিট বিক্রি এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসে পরিমাণ মিলিয়ে দেখলে ২৩ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে শতদ্রুর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। যার জবাবে শতদ্রুর আইনজীবী বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত? সেটা কি ৩-৫ কোটি টাকার মতো? যদি শতদ্রুকে জামিন না দেওয়া হয়, তাহলে এই টাকাটা তিনি কীভাবে দেবেন? ফলে সংস্কারের থেকে টাকা দেওয়ার প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
