অর্ণব আইচ: প্রায় তিনমাস পর অবশেষে জেলমুক্তি। আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মামলায় জামিন পেয়েছেন তৎকালীন কর্তব্যরত টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক তাঁকে এবং আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে জামিন দিয়েছেন। তবে সন্দীপের বিরুদ্ধে হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলা থাকায় এখনই তাঁর জেলমুক্তি হচ্ছে না। কিন্তু অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-খুন মামলা ধামাচাপা পড়ার অভিযোগ ছাড়া অন্য কিছু না থাকায় এদিনই আদালত থেকে সোজা নিজের বাড়ি ফিরে যাওয়ায় কোনও বাধা ছিল না। সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী। এদিন সন্ধ্যায় স্ত্রীর হাত ধরে আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবীর গাড়িতে উঠে যান। সংবাদমাধ্যমের একাধিক ক্যামেরা তাঁর দিকে ঘোরানো ছিল, কিন্তু একটি মন্তব্যও করেননি অভিজিৎ মণ্ডল।
গত ৯ আগস্ট আর জি করে কর্তব্যরত অবস্থায় উদ্ধার হয় জুনিয়র চিকিৎসকের মৃতদেহ। তখনও ধর্ষণ-খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসেনি। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে প্রকৃত ঘটনা আড়ালের অভিযোগ ওঠে। ১৪ সেপ্টেম্বর অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তবে তাঁর সহকর্মীরা বার বারই দাবি করেছিলেন, ওই সময় নিজের কর্তব্য ঠিকমতোই করেছেন টালা থানার ওসি। অবশেষে ১৩ ডিসেম্বর, তিনমাসের মাথায় তিনি জামিন পেলেন। শিয়ালদহ আদালতে জামিনের পর তাঁর আইনজীবী মহম্মদ সাজিদ বলেন, ‘‘গ্রেপ্তারির পরে ৯০ দিন হয়ে গিয়েছে, সিবিআই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেয়নি। সিবিআই বার বার বলছে, এখনও তদন্ত চলছে। তার অর্থ, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনও প্রমাণ মেলেনি।’’
শুক্রবার সন্ধ্যার পর সমস্ত আনুষ্ঠানিক কাজকর্ম সেরে শিয়ালদহ আদালত থেকে বেরন অভিজিৎ মণ্ডল। তাঁকে নিতে এসেছিলেন স্ত্রী। ছিলেন সহকর্মীরাও। ছাড়া পাওয়ার আনন্দে গোপন করলেও তাঁর ছলোছলো চোখ সংবাদমাধ্যমের নজর এড়ায়নি। যদিও জেলমুক্তি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অভিজিৎ মণ্ডল। স্ত্রীর হাত ধরে বেরিয়ে সোজা আইনজীবীর গাড়িতে উঠে যান। আপাতত নিজের বাড়িতেই থাকবেন বলে সূত্রের খবর। তবে গ্রেপ্তারির পর তাঁকে যে সাসপেন্ড করা হয়েছিল, সেই সাসপেনশন উঠবে কি না, সেই প্রশ্ন থাকছে।