সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি কর কাণ্ডে মঙ্গলবার ফের সুপ্রিম কোর্টে শুনানি। সেদিকে নজর সব মহলের। দুপক্ষই অস্ত্রে শান দিচ্ছে। ইতিমধ্যে জুনিয়র চিকিৎসকরা নিজেদের আইনজীবী বদল করেছেন। গীতা লুথরার বদলে এবার থেকে তাঁদের হয়ে শীর্ষ আদালতে সওয়াল করবেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং। মঙ্গলে 'সুপ্রিম' শুনানির আগে সিবিআই-ও প্রস্তুত। নীল নকশা তৈরি করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, মূলত তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে শীর্ষ আদালতে সওয়াল-জবাব এগোতে চায় সিবিআই।
তার মধ্যে প্রথম বিষয়টি অবশ্যই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সংক্রান্ত চালান। গত ৯ তারিখের শুনানিতে এই চালান শীর্ষ আদালতে পেশ করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল এই চালান দেখাতে না পারায় বিচারপতিদের তোপের মুখে পড়েন। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছিলেন, সিবিআইকে তথ্য হস্তান্তরিত করার সময় চালান দেওয়া হয়নি। এক বিচারপতি মন্তব্যে করেছিলেন, চালান না পাওয়া গেলে বুঝতে হবে কিছু গন্ডগোল আছে। কপিল সিব্বলকে সেই চালান পরবর্তী শুনানিতে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। সেই চালান শীর্ষ আদালতে পেশ হল কি না, সেদিকে মঙ্গলবার নজর থাকবে সকলের। এছাড়া তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এবার আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এটা ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরতে পারে সিবিআই।
আগের শুনানিতে চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েও বিচারপতিরা তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলেন। প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা পরিকাঠামো সুনিশ্চিত হয়েছে কি না, সে বিষয়ে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। সেই রিপোর্টে থাকবে কী কী ব্যবস্থা করা হল। এনিয়েও মূলত চারটি বিষয়ে নজর রাখা হবে।
প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালে মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা ডিউটি রুম, মহিলা এবং পুরুষদের জন্য আলাদা শৌচালয়, প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসিটিভি বসানো হবে কি না। ১৭ সেপ্টেম্বরের শুনানির আগে প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালে উপরোক্ত প্রত্যেকটি কাজ হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন সংশ্লিষ্ট জায়গায় ডিএম এবং পুলিশ সুপার।
এদিকে রাজ্যের তরফেও কোন কোন বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করা হবে, সেই রোডম্যাপও তৈরি হচ্ছে। এর আগে গত ৯ তারিখ সুপ্রিম কোর্ট জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা মানা হয়নি। এখনও কর্মবিরতি তুলে পরিষেবা দিতে ফেরেননি আন্দোলনকারীরা। সূত্রের খবর, সেই বিষয়টি তুলে ধরে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় ক্ষতির দিকটি নিয়ে সওয়াল করা হবে।
সেইসঙ্গে অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী নিজে একাধিকবার আন্দোলনকারীদের আলোচনার টেবিলে ডেকেছিলেন, কিন্তু সাড়া পাননি, সেই বিষয়টিও তোলা হবে মঙ্গলবারের শুনানিতে। লাইভ স্ট্রিমিং, ভিডিওগ্রাফির দাবি নিয়ে টানাটানিতে আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে - এই প্রসঙ্গটিও তুলে ধরা হবে। আর এখানেই ওয়াকিবহাল মহলের মত, জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং পালটা জোর দিতে পারেন লাইভ স্ট্রিমিংয়ের উপর। ঠিক কী কারণে রাজ্যের তা নিয়ে আপত্তি, জানতে চাওয়া হতে পারে। সবমিলিয়ে বেশ কয়েকটি বিষয়কে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েই মঙ্গলবার শুনানি হবে।