shono
Advertisement

'বিচার চাই' স্লোগান তুলে প্রতিবাদে শামিল জোড়া খুনে জেল থেকে ফেরা সিপিএম নেতা!

২০০২ সালে দুই যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় ১২ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই সিপিএম নেতার। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নতুন করে ফিরতে মরিয়া।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 02:27 PM Sep 07, 2024Updated: 02:32 PM Sep 07, 2024

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলার মানুষ যে কোনওদিন দেখতেই পারেন, বিলকিস বানু বা উন্নাও-হাথরসের ধর্ষকরা কলকাতায় এসে আর জি কর কাণ্ডে বিচার চেয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে মিছিল করছে! দমদমে জোড়া খুনের ঘটনায় কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত মূল অভিযুক্ত সিপিএম নেতা দুলাল বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের ‘রাস্তায় মিছিল’ করার ছবি দিয়ে সোশ‌াল মিডিয়ায় এমনই মন্তব‌্য করেছেন নেটিজেনরা। তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছে নাগরিক সমাজের একাংশ। আর তার পরেই ১২ বছর জেলে থাকা সাদা ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি, সাদা চুলের ওই সিপিএম নেতার ‘বিচার চাওয়া’ ঘিরে সিপিএমেই প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বুধবার রাতে সিঁথি মোড়ে বি টি রোডে নাগরিক ছদ্মবেশে সিপিএমের অবরোধে যে সমস্ত বামপন্থী অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের একাংশ বেঁকে বসেছেন।

Advertisement

শুক্রবার সিঁথি এরিয়া কমিটির তরুণ প্রজন্মের একাধিক ছাত্র-যুব প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘প্রয়াত প্রাক্তন মুখ‌্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর নির্দেশে গ্রেপ্তার হওয়া দমদমের জোড়া খুনের আসামি এরপর থেকে নির্যাতিতার বিচার চেয়ে মিছিল বা কর্মসূচিতে এলে আমরা আর যাব না। এর পর তো কবে দেখব, গুজরাটের বিলকিস বানুর ধর্ষকদের নিয়ে এসে আমাদের পাশে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হবে। মণিপুরের নারী নির্যাতনকারীরাও কি আসবে বিচার চাওয়া এই মিছিলে?’’ নাগরিক মিছিলের নামে সিপিএমের আয়োজন করা মিছিলে ‘দমদমের দুলাল’ ঢুকে পড়া নিয়ে অবশ‌্য আলিমুদ্দিন মুখে কুলুপ এঁটেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে পাল্টা কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে, বিচার নয়, চেয়ারটাই আসল লক্ষ‌্য, তাই শূন‌্য হওয়া পার্টি জোড়া খুনের শাস্তিপ্রাপ্ত কুখ‌্যাতদেরও আসরে নামিয়ে ভিড় বাড়িয়ে সোশ‌াল মিডিয়ায় দেখাচ্ছে।

[আরও পডুন: কফি হাউসের আড্ডায় টানা ২৬ হাজার দিন! সম্মানিত ‘প্রবীণতম কফিখোর’]


২০০২ সালের এপ্রিল মাসের গোড়ায় সিপিএমের সালিশি সভায় পিটিয়ে মারা হয় দুই যুবককে। ওই সভার মূল হোতা ছিলেন তৎকালীন কাশীপুর-বেলগাছিয়া জোনাল কমিটির সদস্য দুলাল বন্দ্যোপাধ‌্যায়। আর তখন গোটা এলাকায় দুলালের নামে বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খেত। বস্তুত সেই কারণে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর পুলিশ যখন দুই স্বামীহারা যুবতীর অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল, তখন পুলিশ জিপের রাস্তা আটকে দেন প্রয়াত সে কালের দাপুটে শ্রমিক নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক রাজদেও গোয়ালা। এখানেই শেষ নয়, ক‌্যাডারদের পিটুনিতে নিহত দুই যুবকের বিধবা স্ত্রীরা যাতে আদালতে সাক্ষী দিতে যেতে না পারেন, সেজন‌্য দুলালের দলবল একাধিকবার প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল।

[আরও পডুন: সন্দীপকে শোকজ রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের, বাতিল হতে পারে রেজিস্ট্রেশন?]

তবু সেই সময় পাইকপাড়ার প্রয়াত সিপিএম কাউন্সিলর দিলীপ বন্দ্যোপাধ‌্যায়দের কিছুটা সমর্থন থাকায় আদালতে পৌঁছে স্বামীর হত‌্যাকারী সিপিএম নেতা দুলালের বিরুদ্ধে সাক্ষ‌্য দেন বিধবারা। ১২ বছর কারাবাসের সাজা হয় দুলালের। সাজা পাওয়ার পর ফিরে এসে সিপিএম রাজ‌্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের আশীর্বাদ নিয়ে গত দুবছর ধরে পুরনো ফর্মে ফিরে আসার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন সেই জোড়া খুনের দায়ে শাস্তি পাওয়া সাদা চুলের ফ্রেঞ্চকাট দাড়ির সিপিএম নেতা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আর জি কর কাণ্ডের 'প্রতিবাদী মুখ' জোড়া খুনে সাজা পাওয়া সিপিএম নেতা!
  • সিঁথিতে নাগরিক সমাজের মিছিল থেকে তাঁর গলাতেও 'বিচার চাই' স্লোগান।
Advertisement