সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভয়া কাণ্ডের তিনমাস হয়ে গিয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মামলায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে মূল অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন করা হয়েছে। ১১ নভেম্বর থেকে শিয়ালদহ আদালতে শুরু হবে বিচারের প্রক্রিয়া। এই পরিস্থিতি শনিবার, তিনমাসের মাথায় ফের রাজপথে আন্দোলনে নামল জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন। শনিবার একদিকে এসএসকেএমে গণ কনভেনশনের ডাক দিল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। অন্যদিকে, 'দ্রোহের গ্যালারি' সাজিয়েছেন জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের সদস্যরা। আর একযোগে কলকাতার পথে মিছিলে নেমেছে জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট, জয়েন্ট ডক্টরস প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট ডক্টরস ফোরাম। শামিল নাগরিক সমাজেও।
ধর্মতলার অনশন মঞ্চে 'জনতার চার্জশিট'। ছবি: ব্রতীন কুণ্ডু।
গত ৯ আগস্ট হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা তোলপাড় ফেলেছিল গোটা দেশে। নারী সুরক্ষা নিয়ে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠেছিল। দেশজুড়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের সমর্থন করেন সিনিয়র ডাক্তাররাও। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মূল অভিযুক্ত হিসেবে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে সিবিআই সেই তদন্তভার নেওয়ার পর মাস দুয়েকের মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অভয়ার সুবিচারের দাবিতে গত কয়েক মাস ধরে কলকাতার রাজপথ সাক্ষী ছিল আন্দোলনের। উৎসবের মরশুমেও তা চলেছে। ঘটনার তিনমাসের মাথায় ফের তা পথে প্রতিবাদে নামলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। শনিবার প্রতিবাদী সমস্ত ছবি দিয়ে আর জি কর এবং এসএসকেএমের অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ে সাজানো হয়েছে 'দ্রোহের গ্যালারি'। জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের তরফে আবেদন, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে এমন গ্যালারি হোক।
রাজপথে জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট-সহ একাধিক সংগঠন।
'দ্রোহের গ্যালারি'র পাশাপাশি শনিবার ফ্রন্টের তরফে মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলে শামিল হয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। রয়েছেন জয়েন্ট ডক্টরস প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট ডক্টরস ফোরামের সদস্যরাও। অন্যদিকে, এসএসকেএমের অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ে গণ কনভেনশনের আয়োজন করেছে জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের পালটা সংগঠন জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের নাগরিক কনভেনশন।
অ্য়াসোসিয়েশনের তরফে সৌরভ কুমার দাসের বক্তব্য, ''আমরাই প্রথম দিন সব কিছু নির্বিশেষে মানুষকে আহ্বান জানাই। আর জি কর হাসপাতাল অন্য অনেক হাসপাতাল থেকে বেশি নিরাপদ। প্রত্যেক মেয়ের সম্মান আর জি করে ছিল। আমরা আন্দোলনের নামে রাজনীতি চাইনি। আমরা চাই দোষীদের ফাঁসি হোক। সিবিআই দ্রুত তদন্ত করুক। আমরা চাই ২৬ জানুয়ারির মধ্যে এর বিচার শেষ হোক। 'অভয়া' ওয়ার্ড ওর নামে হোক। যাঁরা রাজনীতির শিকার বলছেন, তাদের সিবিআই হেফাজতে নেওয়া হোক। দিদির কাজের ওয়ার্ডের নিচের তলায়, আসফকুল্লা, উপরের তলায় অনিকেত কাজ করেন। যাঁরা বলছেন, রাজনীতির শিকার, তাঁদের হেফাজতে নিক। যাদের দরকার নিক। ওরা কী জানে খুঁজে বার করতে হবে। নাকি শুধুই টাকার খেলা!''
তাঁর আরও বক্তব্য, ''সব তোলা টাকার হিসাব চাই। ৪.৭৫ কোটি টাকার হিসাব চাই। এই টাকা অভয়া দিদির বাড়ির লোককে দেওয়া হোক। এত টাকা কোথায় গেল? কেন পার্সোনাল অ্যাকাউন্টে গেল? রাজ্য সরকার তদন্ত করুক। ইডি নজর রাখুক। আর জি করের দুর্নীতির চেয়ে বেশি টাকার দুর্নীতি উঠে আসবে।''