ফারুক আলম: 'গোট ট্যুর' শেষে ফিরে গিয়েছেন লিওনেল মেসি। তবে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তাঁকে নিয়ে যে বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছিল, তার রেশ এখনও কাটেনি। মেসিকে কলকাতায় আনার প্রধান কারিগর ছিলেন শতদ্রু দত্ত (Satadru Dutta)। যুবভারতীর বিশৃঙ্খলার পরে ১৩ ডিসেম্বর, শনিবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যুবভারতী কাণ্ডে ধৃত শতদ্রুকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। যুবভারতীতে মেসির অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা কেন হয়েছে? তদন্তকারীদের জেরার সামনে এবার এই প্রসঙ্গে বিস্ফোরক দাবি করেছেন শতদ্রু দত্ত।
গতকাল টানা জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল শতদ্রুকে। সেখানে তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছেন, পিঠে হাত দেওয়া বা জড়িয়ে ধরা একেবারেই পছন্দ করেননি মেসি। বিদেশ থেকে আসা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, বারবার ঘোষণা করেও কোনও লাভ হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন, এত মানুষ কোথা থেকে এল?
সূত্রের খবর, জেরায় শতদ্রু (Satadru Dutta) বলেছেন, "প্রথমে দেড়শো জনের গ্রাউন্ড অ্যাক্সেস কার্ড দেওয়া হয়। পরে প্রভাবশালীদের চাপে এই সংখ্যাটাকে তিনগুণ বাড়াতে হয়েছিল।" এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও বলেন, "ভারত সফরের জন্য মেসিকে ৮৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়। আর কর বাবদ ১১ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল ভারত সরকারকে।" অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ টাকা আসে স্পনসরদের কাছ থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ এসেছে টিকিট বিক্রি করে।
উল্লেখ্য, ক্রীড়াপ্রেমীদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত শনিবার শহরে পা রেখেছিলেন লিওনেল মেসি। ঠাসা কর্মসূচি ছিল তাঁর। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবভারতীতে মেসি দর্শনে এসেছিলেন দর্শকরা। দর্শকদের অভিযোগ, যুবভারতীতে ঢোকার পর থেকেই মেসিকে ঘিরে ছিলেন ভিআইপিরা। সেই সংখ্যাটা কম করে ১০০ হবে। দর্শকদের অভিযোগ, গ্যালারি থেকে ২০ মিনিট মেসিকে দেখাই যায়নি।
শতদ্রুর বিরুদ্ধে দু'টি মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বিধাননগর দক্ষিণ থানায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়। অশান্তি, ভাঙচুর, হিংসা ছড়ানো-সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৯২, ৩২৪ (৪)(৫), ৩২৬ (৫), ১৩২, ১২১ (২), ৪৫, ৪৬ এবং নাশকতামূলক কার্যকালাপ ছড়ানোর ও জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়। এমনকী শতদ্রুর বিরুদ্ধেও একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আর এবার জেরায় মুখ খুলেছেন শতদ্রু।
