ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সন্দেশখালি এলাকায় কর্তব্যরত আইপিএস (IPS) অফিসার জসপ্রীত সিংকে ‘খলিস্তানি’ বলে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কটাক্ষের জেরে তোলপাড় শিখদের মহলে। বিরোধী দলনেতার ওই মন্তব্য আসলে তাঁদের পবিত্র পাগড়ির অপমান বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। এবার এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল শিখ কমিউনিটি (WB Sikh Community)। বৃহস্পতিবার তাদের এক প্রতিনিধিদল রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের (C V Anand Bose) কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের আর্জি, শিখ সম্প্রদায়ের অবমাননা নিয়ে পদক্ষেপ করুন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
অশান্তির সূত্রপাত মঙ্গলবার। অশান্ত সন্দেশখালি (Sandeshkhali)সংলগ্ন ধামাখালির কাছে বিজেপি প্রতিনিধিদলকে আটকায় পুলিশ। সেই দলে ছিলেন ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চের স্পেশাল সুপার, আইপিএস অফিসার জসপ্রীত সিং। শিখ সম্প্রদায়ের ওই আইপিএসের মাথায় স্বভাবতই পাগড়ি ছিল। অভিযোগ, আর তা দেখেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নাকি ‘ওটা খলিস্তানি’ বলে কটাক্ষ করেন। তাতে খেপে যান ওই পুলিশ অফিসার। পালটা প্রশ্ন করেন, ”আমার মাথায় পাগড়ি দেখে খলিস্তানি বলছেন? এ কেমন কথা?” উভয়ের তর্কবিতর্কে ধামাখালির কাছে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শুভেন্দুর হয়ে কথা বলতে যান অগ্নিমিত্রা পল। তিনিও বেশ উত্তেজক কথাবার্তা বলেন। একজন পুলিশ আধিকারিককে ‘খলিস্তানি’ বলার জের গড়ায় বহু দূর।
[আরও পড়ুন: লাঠি হাতে মারমুখী মহিলারা, বাইকে পালালেন শাহজাহানের ভাই]
কলকাতায় বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন বিক্ষোভ শুরু করেন। বৃহস্পতিবার কলকাতার শিখ সম্প্রদায়ের ৭ জন প্রতিনিধি এদিন যান রাজভবনে, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে। এ বিষয়ে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চেয়ে তাঁরা স্মারকলিপিও দেন। রাজভবন থেকে বেরিয়ে তাঁরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ”আমরা ওঁর সঙ্গে দেখা করলাম আজ। জানালাম আমাদের এই পাগড়ির ইতিহাসের কথা। এটা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত সম্মানের, গর্বের। একজন কর্তব্যরত আইপিএস অফিসারকে শুভেন্দু অধিকারী ‘খলিস্তানি’ বলে যে অপমান করেছেন, তা খুব লজ্জার। আমরা ওঁকে বলেছি, আপনি যতটা পারবেন, এবিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। দোষীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। উনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে মুখ্যমন্ত্রীকে এনিয়ে চিঠি লিখবেন। জানাবেন, যাতে দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়।”
পরে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বিবৃতি দিয়ে জানান, কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা অনুচিত। শিখদের পাশে রয়েছে বাংলা।
দেখুন ভিডিও: