রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিশ্বাস, শ্রুতি কিংবা স্নেহাশিস, পায়েলরা ভিটামিনেই ফিট। চিকিৎসকদের নির্দেশে দু’বেলাই ভিটামিন ওষুধ খেতে হচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানার এই সিংহ ও রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারদের। করোনা (Coronavirus) আবহে ঘোরতর মাংসাশীদের মেনুতে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাড়তি মিনারেলস। উদ্দেশ্য একটাই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে করোনার হাত থেকে চিড়িয়াখানার (Alipore Zoo) পশুদের রক্ষা করা। কারণ, শুধু মানুষ নয়, পশুদের দিকেও থাবা বাড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস।
দেশে সিংহের করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে। এই মাসের শুরুতে হায়দরাবাদ চিড়িয়াখানার আটটি সিংহ করোনা সংক্রমিত হয়েছিল। হায়দরাবাদের পর জয়পুরেও কোভিড আক্রান্ত হয়েছে সিংহ। এমন খবরে উদ্বেগ বেড়েছে রাজ্যের। তবে স্বস্তির খবর, আলিপুর-সহ রাজ্যের অন্য চিড়িয়াখানার কোনও পশুর মধ্যে সংক্রমণের কোনও খবর নেই।
[আরও পড়ুন: কোভিডের থাবাতেও থমকে নেই কাজ, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর টানেল খোঁড়া শেষ হবে চলতি সপ্তাহেই]
জয়পুর চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর, ত্রিপুর নামের একটি সিংহের কোভিড হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে তার স্বাস্থ্য খুব একটা ভাল ছিল না। তাকে পর্যবেক্ষণে রেখে নমুনা সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরই দেখা যায় কোভিড আক্রান্ত সে। তড়িঘড়ি পার্শ্ববর্তী খাঁচায় থাকা অন্যান্য পশু যেমন সিংহী, বাঘ, ব্ল্যাক প্যান্থারের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, তবে তাদের শরীরে কোভিডের সংক্রমণ দেখা যায়নি।
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত বৃহস্পতিবার জানান, এখানে সব জীবজন্তু সুস্থ রয়েছে। প্রতিদিন বাঘ, সিংহ-সহ অন্যান্য পশু প্রাণীদের খাঁচা সংক্রমণ মুক্ত করতে স্প্রে করা হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি জানালেন, চিকিৎসকদের পরামর্শে দু’বেলা ভিটামিন ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বাঘ-সিংহ থেকে অন্যান্য পশুদের।
সিংহ জুটি বিশ্বাস ও শ্রুতি, রয়্যাল বেঙ্গল স্নেহাশিস, পায়েলদের খাওয়ানো হচ্ছে ভিটামিন ট্যাবলেট। পশু চিকিৎসকরা জীবজন্তুদের আচরণের উপর কড়া নজর রেখেছেন। তাছাড়া চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহিরাগতদের থেকে সংক্রমণের ভয়ও নেই। খাঁচার কিপাররাও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই খাঁচায় ঢুকছেন। খাঁচায় ঢোকার আগে থার্মাল স্ক্রিনিং করে তবেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। বক্তব্য আশিসবাবুর।
পশুপ্রেমীদের জন্য সুখবর এটাই। দুই সিংহ জুটি বিশ্বাস এবং শ্রুতি, সাদা বাঘ বিশাল, রয়্যাল বেঙ্গল স্নেহাশিস, পায়েল, তারকা শিম্পাঞ্জি বাবু এই করোনাকালে সুস্থ রয়েছে। কিপাররা যাঁরা খাবার দিচ্ছেন বা খাঁচায় ঢুকছেন তারা মাস্ক ও গ্লাভস পরে থাকছেন। পশুদের আচরণে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি চলছে। বাঘ বা সিংহদের শরীরের তাপমাত্রা দেখার জন্য থার্মাল গান থাকলেও তাদের শরীরের ঘন লোমের জন্য পরীক্ষা করাটা সমস্যার। তাই সাবেকি থার্মোমিটারের উপর ভরসা করতে হয়। এক্ষেত্রে পশুদের মলদ্বারে থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়ে থাকে। তবে এখনও বাঘ-সিংহ বা অন্যান্য পশুদের আচরণে অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়েনি। ধারাবাহিকভাবে চলছে হেলথ চেক আপ।