shono
Advertisement

‘বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর শ্বশুর হিন্দু মহাসভা করতেন’, তির তৃণমূলের

সামনে এসেছে সুভাষ চক্রবর্তীর কাছে এক যুবকের হয়ে চাকরির সুপারিশে সুজনের চিঠি।
Posted: 02:09 PM Mar 29, 2023Updated: 02:33 PM Mar 29, 2023

স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা ও কোচবিহার: নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তথ‌্য তালাশে নেমে বিস্ফোরক তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। মঙ্গলবার কিছু তথ্যের ভিত্তিতে তাদের নিশানায় সিপিএমের (CPM) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস‌্য সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) শ্বশুর শান্তিময় ভট্টাচার্য। তৃণমূলের রাজ‌্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) দাবি, এই শান্তিময়বাবুর আসল নাম দেবব্রত ভট্টাচার্য। তিনি ছিলেন হিন্দু মহাসভার কর্মী।

Advertisement

সুজনবাবুর শ্বশুর ছিলেন হিন্দু মহাসভার কর্মী! আর একটি আইনি জটিলতা থেকে বাঁচতে সিপিএম হয়েছেন– এই মারাত্মক দাবি তুলে কুণালের অভিযোগ, নাম ভাঁড়িয়ে রাজনৈতিক পরিচয় বদলে একেবারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সিপিএমের সম্পাদক হয়ে যান শান্তিময়বাবু। একইসঙ্গে কুণালের অভিযোগ, এমন নামের কোনও আইনি নথি পাওয়া যায়নি। অথচ, সেই নামেই নিজের জেলায় ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা’ হয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে বসে একের পর এক লোককে নিয়োগ দিয়েছেন। কার সহযোগিতায় শান্তিময়বাবুর এমন ভোলবদল, সে সম্পর্কিত তথ‌্যও সামনে আনা হবে বলে জানান কুণাল। বলেন, সবকিছু শিক্ষা দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে তদন্তের দাবিতে। কুণালের কথায়, “এই শান্তিময় ভট্টাচার্যর নামের আইনি অস্তিত্বের শংসাপত্র কোথায়? এর তদন্ত চাই।”

[আরও পড়ুন: ‘আমার ছবি দেখান, তাহলে ঠিকই খাবে’, পোষ্য সারসকে হারিয়ে উদ্বিগ্ন আরিফ]

এদিনই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ আবার নিশানা করেছেন সিপিএমের রাজ‌্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে। বাম আমলে নিয়োগ পাওয়া সনাতন সাহা, বিমল দাস, অঞ্জলি সেন, মলয় রায়, মলয় গুহনিয়োগীদের নাম প্রকাশ করে সোশ‌্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘এঁরা সবাই থার্ড ডিভিশনে পাস করে শিক্ষকতার চাকরি করেছেন।’ আরও নাম তিনি প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছেন। গোটা ঘটনায় সেলিমকে দায়ী করেছেন তিনি। সঙ্গে লিখেছেন, ‘সেলিম, আপনারা শুধু নিজের বাবার নয়, শিক্ষার বাবারও পিন্ডি চটকেছেন’। পরে সে প্রসঙ্গে বলেন, সেলিম তাঁর উদ্দেশে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। তারই জবাবে আটের দশকের নামের কিছু তালিকা তিনি সামনে এনেছেন, যাঁরা থার্ড ডিভিশনে মাধ্যমিক অথবা একাদশ শ্রেণি পাস করেও চাকরি করেছেন। কেউ তাঁরা এখন অবসরপ্রাপ্ত। তাঁদের মধ্যে দু’জনের মৃত্যুও হয়েছে। তবে তাঁদের কারও পেনশন আটকে যাক, সেটা চান না। যদিও তাঁদের চাকরি কীভাবে হয়েছিল সেটা সিপিএম স্পষ্ট করুক বলে দাবি তুলেছেন উদয়নবাবু।

[আরও পড়ুন: লেনিন-হো চি মিন আছে, বাঙালি বিপ্লবীর নামে রাস্তা কোথায়? বিস্মিত মেয়র]

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক যখন অভিযোগ, তার মধ্যেই সামনে আসে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ সুজন চক্রবর্তীর নিজের প‌্যাডে লেখা একটি চিঠি, যেখানে প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের এক যুবকের হয়ে চাকরির সুপারিশ করেছেন তিনি। তৃণমূল এ নিয়ে সরব হতেই সুজনের বক্তব‌্য, “একটা ছেলের জন‌্য সুপারিশ করেছি মাত্র। চাকরি বিক্রির অভিযোগ তো নেই।” এর মধ্যেই কুণাল নিশানা করেন সুজনবাবুর শ্বশুর প্রয়াত শান্তিময় ভট্টাচার্যকে। কুণালের কথায়, “মিলি চক্রবর্তীর চাকরি নিয়ে যে অভিযোগ, সেটা সুজন চক্রবর্তীর দিকে বেশি যায় না। কারণ তিনি তখন সামান‌্য হোলটাইমার। আর মিলিদেবীর পরিচয়, উনি সুজনবাবুর স্ত্রী। কিন্তু অভিযোগটা শান্তিময় ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে। কারণ, তিনি তখন সিপিএমের জেলা সম্পাদক। তাঁর সময় ভূরিভূরি চাকরি হয়েছে। আর সুজনদা যখন প্রভাবশালী হয়েছেন, তখনকার চিঠি সামনে এসেছে।”

এমনকী, বেনামে চাকরিতে নিয়োগের এই অভিযোগে তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বে বড়সড় আন্দোলনও হয়েছিল। কুণালের কথায়, “শান্তিময়বাবুর কোনও বৈধ শংসাপত্র ছিল না। সাঁইবাড়ি মামলায় এরকম অনেক ঘটেছে। শান্তিময় নামে কোনও লোকের আইনি অস্তিত্বই নেই। অথচ তিনি সরকারি পদে বসে লোককে চাকরি দিচ্ছেন!” সেই সঙ্গেই কুণালের প্রশ্ন, “আমরা সবটা শিক্ষা দপ্তরে পাঠাচ্ছি। ভোটার কার্ডও তাঁর হয়তো ছিল। কিন্তু কীসের ভিত্তিতেই-বা সেটা হল? শান্তিমবাবুর নামে জন্মের শংসাপত্র ছিল কি? ওই নামে বাল‌্য, কৈশোরের কোনও নথি আছে?”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement