সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নারী ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডি'লিট জাপানের ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয়ের। বুধবার আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। এই সম্মান মা-মাটি-মানুষকে উৎসর্গ করেছেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে জাপান ও বাংলার সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। হাজার সম্মানপ্রাপ্তির পরেও তিনি যে একেবারে 'ঘরের মেয়ে'র মতো জীবন কাটাতে চান, তা-ও স্পষ্ট জানান বাংলার 'দিদি'।
মমতা বলেন, "বাংলায় আসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাই ধন্যবাদ। আমি সত্যি অভিভূত। শান্তি, সম্প্রীতি, সংস্কৃতির জন্য জাপান সকলের কাছে উদাহরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য আমার শুভকামনা।"
জাপান এবং বাংলার সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "বাংলা-জাপানের বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে কাজ করে। যা আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের জন্য খুবই ভালো। জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহু পুরনো। গত ৭ বছর শিল্প সম্মেলনে জাপানের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। আশা করি এবার তাঁদের পাশে পাব। ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরাও বিশ্ব বাংলা শিল্প সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করি। আমন্ত্রণপত্র অবশ্যই পাঠানো হবে।" তিনি বলেন, "একসময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাপানে গিয়েছিলেন। সকলের মনে রয়েছে। স্বাধীনতার আগে স্বামী বিবেকানন্দ জাপানে গিয়েছিলেন। রাসবিহারী বসু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও গিয়েছিলেন। নেতাজির মৃত্যু নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। তবে ইতিহাস ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনে আপনাদের একটি ইউনিট রয়েছে।"
কেন জাপানের প্রতিনিধিরা বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে সম্মানিত করলেন মুখ্যমন্ত্রীকে, সে কারণও স্পষ্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জাপানের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, "আপনারা এত ইতিবাচক। নভেম্বরে এই অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছিল। আমাকে বলা হয়েছিল আপনি জাপানে না আসলে, আমরা যাব। আপনারাই বলুন কীভাবে প্রত্যাখ্যান করব? কীভাবে বলব আসবেন না? তাই তো তাঁদের অভ্যর্থনা জানাই। এটা একজন মানুষ হিসাবে নৈতিকতা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সত্য়ি আপনাদের দেখে আমি মুগ্ধ।" আগামী বছর জাপানে যাওয়ার আশ্বাসও দেন মুখ্যমন্ত্রী।
ধনধান্য অডিটোরিয়ামে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
বাংলার শিল্পোন্নয়নের ছবি তুলে ধরে মমতা আরও বলেন, "বাংলায় বহু বিদেশি সংস্থা কাজ করেছে, বিনিয়োগ করছে। মিৎসুবিসি, টাটা, জাইকা। সিলিকন ভ্যালিতে অনেকে বিনিয়োগ করছে। ওয়েবেল ও ফুজি শপও হাতে হাত মিলিয়ে বিনিয়োগ করছে। আজ থেকে নয়। জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহু পুরনো। জাপান খুব সুন্দর দেশ। আমাদের স্বাস্থ্যচর্চার কৌশল শেখার মতো। হিরোশিমা, নাগাসাকির মতো ঘটনা ঘটার পরেও আপনারা ফের জাপানকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছেন।"
জাপানের প্রশংসার পাশাপাশি হাজারো সম্মানপ্রাপ্তির পরেও তিনি 'বাংলার ঘরে'র মেয়ের মতোই জীবন কাটাতে চান বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, "আমি ভিআইপি নই, এলআইপির মতো জীবন কাটাতে চাই।" 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে নিজের বক্তব্য শেষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
