গোবিন্দ রায়: এজলাসের বাইরে আইনজীবীদের একাংশের বিক্ষোভের ঘটনায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার কাছে দুঃখপ্রকাশ করলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। বুধবার বিচারপতি মান্থার এজলাসে এক মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্যের এজি বলেন,”বিক্ষোভের ঘটনায় আমি দুঃখিত।” ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা আর ঘটবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তারপরেও এদিন বিচারপতি মান্থার এজলাসে অনুপস্থিত ছিলেন একাধিক সরকারি আইনজীবী। এনিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি। দ্রুত এই সমস্যা মিটে যাবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন এজি। আইনজীবীদের আচরণে দুঃখপ্রকাশ করেছেন বার অ্য়াসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিকও।
ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। ওইদিন সকাল থেকে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) বিচারপতি মান্থার এজলাসে গেট আটকে বিক্ষোভে (Agitation) শামিল হন আইনজীবীদের একাংশ। তিনি এজলাসে এসেও বিক্ষোভের জেরে চলে যান। এদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের বাইরের দেওয়ালে পোস্টার দেখা যায়। তাতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ছবি দিয়ে ইংরাজিতে লেখা – “লজ্জা, বিচারব্যবস্থার নামে কলঙ্ক! কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন – কোথায় আসল বিচার মিলবে?”
[আরও পড়ুন: বিবেকানন্দের জন্মতিথিতেই কলকাতায় শুরু গঙ্গা আরতির প্রস্তুতি, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
মঙ্গলবার সকালে আদালত খোলার পরও আইনজীবীদের একাংশ বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটে অনড় থেকে শুনানিতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। হাই কোর্টে বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে। এমনকী, যোধপুর পার্কে তাঁর বাসভবনেও পোস্টার পড়ে। আইনজীবীদের তাঁর এজলাসে যেতে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার জল গড়ায় বহুদূর। ইতিমধ্যে অবমাননার রুল জারি করা হয়। বুধবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় কিছুটা।
তবে এদিনও রাজ্যের এজির কাছে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা অভিযোগ করে বলেন, অধিকাংশ মামলায় তাঁর এজলাসে অনুপস্থিত থাকছেন সরকারি আইনজীবিরা। প্রশ্ন করেন, “রাজ্যের আইনজীবীরা আসছেন না কেন?” জবাবে এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি কথা বলেছি। তাঁরা চায় মামলায় অংশ নিতে। বারের বেশিরভাগ আইনজীবীরা যোগদানের পক্ষে। আমি একা, সব মামলায় তো একা অংশগ্রহণ করতে পারি না। তবে তারা মামলায় অংশগ্রহণের পক্ষে।”
[আরও পড়ুন: অবশেষে উঠল বয়কট! ‘আদালতের সন্মান নষ্ট করবেন না’, আরজি বিচারপতি মান্থার]
বিচারপতি আরও বলেন, “অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি ছিল। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলা আমি স্থগিত রেখেছি। আজ কিন্তু সরকারি আইনজীবী অনুপস্থিত থাকার জন্য মামলায় কোন নির্দেশ দিতে পারলাম না। বিচারপ্রার্থীদের কথা ভাবতে হবে। দেখা যাক কাল কী হয়।” জবাবে রাজ্যের এজি বলেন, “খুব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এত মামলায় আমায় উপস্থিত থাকতে হচ্ছে যে আমি বিষয়টি জানতাম না। খোঁজ নিয়ে দেখছি কেন এটা হচ্ছে।”