নব্যেন্দু হাজরা: রাজ্যের মুকুটে নয়া পালক। 'সেরা পর্যটন গ্রাম'-এর তকমা পেল মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের লালবাগের বড়নগর গ্রাম। কেন্দ্রের পর্যটন মন্ত্রকের কৃষি-পর্যটন প্রতিযোগিতায় 'সেরা পর্যটন গ্রাম'-এর তকমা পেল বাংলার এই গ্রাম। X হ্যান্ডলে এই সুখবর জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসে কেন্দ্রের 'সেরা পর্যটন গ্রাম'-এর পুরস্কার বাংলার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেই জানান তিনি।
মমতা এদিন X হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের কৃষি-পর্যটন বিভাগের প্রতিযোগিতায় ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’-এর তকমা পেয়েছে মুর্শিদাবাদের বড়নগর গ্রাম। এই খবরে আমি আপ্লুত। এ রাজ্যে যে অনন্য ভান্ডার রয়েছে, আরও বেশি করে তার প্রচার করে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেব আমরা।’’
এই বড়নগর গ্রামটি 'ভারতের বারাণসী' হিসাবে পরিচিত। টেরাকোটা মন্দির কমপ্লেক্সের অধীনস্থ এই গ্রামে রয়েছে একাধিক মন্দির। রয়েছে ভবানীশ্বর, রাজরাজেশ্বরী, গঙ্গেশ্বর শিব, পঞ্চমুখী শিব, সিদ্ধেশ্বরী এবং আদ্যা মন্দির। শিব, কালী ও বিষ্ণু-সহ বিভিন্ন হিন্দু দেবতার মূর্তি রয়েছে এই গ্রামে। মন্দিরের গায়ে রয়েছে হিন্দু পুরাণের নানা ঘটনার বর্ণনা দেওয়া ছবি। ইতিহাস বলছে, এই মন্দিরগুলি রানি ভবানী অষ্টাদশ শতকে তৈরি করিয়েছিলেন।
এছাড়া বড়নগর গ্রামের সঙ্গে তাঁত শিল্পেরও যোগ রয়েছে। এখানকার তাঁতশিল্পীরা বালুচরী, জামদানি, টাঙ্গাইলের মতো ঐতিহ্যশালী শাড়ি তৈরি করেন। এখানকার বহু মানুষ বাঁশ ও বেতের কারুশিল্প, মৃৎশিল্পের সঙ্গেও জড়িত। স্থানীয় বেশিরভাগ মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের তৈরি করা বিভিন্ন হস্তশিল্প, খাবারদাবার, আচার অনেক সময়েই পর্যটকরা কেনেন। তাঁর ফলে আর্থিকভাবে লাভবান হন স্থানীয়রা। এই গ্রামে পর্যটকদের সুবিধায় রয়েছে একাধিক হোম স্টে-ও। কেন্দ্রের এই স্বীকৃতিতে পর্যটন ব্যবসায় জোয়ার আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।