দীপঙ্কর মণ্ডল: ফের মুখ্যমন্ত্রীকে দীর্ঘ চিঠি লিখে নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। তাতে তিনি অধিকাংশটাই অভিযোগ জানিয়েছেন, তৃণমূল তাঁকে ‘বিজেপির এজেন্ট’ বলে বারবার অভিহিত করায় তিনি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেছেন। এছাড়া মণীশ শুক্লা হত্যাকাণ্ড, বেলেঘাটা বিস্ফোরণ-সহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয় চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ধনকড়। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ফের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিটি নিজের টুইটারে দিয়েছেন রাজ্যপাল।
চিঠির শুরুতেই ধনকড় মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) এবং প্রশাসনিক কর্তাদের আচরণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, সরাসরি প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্যপালের বাক্যবিনিময় অনেক পরিস্থিতিই সহজ করে দেয়। কিন্তু বাংলায় তা হচ্ছে না। উলটে একজন রাজ্যপালকে শাসকদলের নেতা,মন্ত্রীরা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ‘এজেন্ট’ বলে বারবার উল্লেখ করছেন, যা আদতে সাংবিধানিক প্রধানের পদ এবং কার্যালয়ের পক্ষে অবমাননাকর। তাঁর আরও অভিযোগ, প্রশাসনই বরং সাংবিধানিক নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না।
[আরও পড়ুন: নবান্ন অভিযানে জলকামানে ব্যবহৃত রাসায়নিকের প্রকৃতি জানার দাবি, অমিত শাহকে চিঠি লকেটের]
পাশাপাশি নাগরিকদের সুরক্ষা প্রদানকারী পুলিশ যে এখন শাসকদলের কথায় কাজ করছে, ফের সেই অভিযোগ তুলে তাঁর পরামর্শ, পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হতে হবে। সেইমতো কাজ করতে হবে। অন্যথায় তা গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকারক হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি মণীশ শুক্লা হত্যাকাণ্ডে ডিজিপিকে তলব এবং বিজেপির নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মী বলবিন্দর সিংয়ের আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে তাঁকে গ্রেপ্তারি নিয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের ভূমিকার উল্লেখ করেছেন। দুটি বিষয়ই তাঁর কাছে যথেষ্ট অপ্রত্যাশিত বলে মনে হয়েছে। এদিনই বন্দি বিজেপি কর্মী বলবিন্দর সিংয়ের স্ত্রী-পুত্র রাজভবনে গিয়ে রাজ্যাপলের সঙ্গে দেখা করেছেন।
চিঠির শেষে তিনি আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, একজন রাজ্যপালের যা কর্তব্য, তা তিনি করতে বদ্ধপরিকর। খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে রাজ্য প্রশাসন সেই কাজ অনেক মসৃণভাবে করার রাস্তা তৈরি করে দিতে পারে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে তিনি লেখেন যে রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষায় তাঁকেই এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া বলে আশাবাদী ধনকড়। চিঠিতে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন, সংঘাতের মধ্যে দিয়ে নয়, রাজভবন-নবান্ন একজোট হয়ে কাজ করলে, তবেই সবচেয়ে সুরক্ষিত এবং শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হবে। রাজ্যপালের এই চিঠি নবান্ন-রাজভবনের সংঘাতকে আরও বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে। এবার নবান্ন কী জবাব দেয়, সেদিকেই তাকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।