সুদীপ রায়চৌধুরী: রাজ্যে ভোট পরবর্তী বিক্ষিপ্ত অশান্তি নিয়ে ফের কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যপাল। শুক্রবার তিনি ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মাহেশ্বরী ভবনে। এই ভবন থেকেই বিজেপি কর্মী ও তাঁদের পরিবারকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর তাঁদের নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজভবনে দেখা করতে যাওয়ার পথে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বিরোদী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্যপালের মন্তব্য, ''এটা সংবিধান বিরোধী।'' এর পরই তিনি রাজ্য সরকারের উদ্দেশে তোপ দেগে জানান, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরকারের থেকে এখনও কোনও রিপোর্ট পাননি। কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে জানার ছিল, তা জানতে পারেননি। রাজ্যপালের আরও হুঁশিয়ারি, ''আমি কিন্তু চুপ করে বসে থাকব না।'' এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখতে চলেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
ভোটের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছোটখাটো রাজনৈতিক সংঘর্ষের (Post Poll Violence) ঘটনা ঘটেই চলেছে। তৃণমূলের 'অত্যাচারে' বিজেপির বহু কর্মী, সমর্থক পরিবার-সহ ঘরছাড়া হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের কলকাতার (Kolkata) মাহেশ্বরী ভবনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
[আরও পড়ুন: ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও…’ শেষবার ইউরোতে নামতে চলেছেন যে পাঁচ মহাতারকা!]
বৃহস্পতিবার সেসব ঘরছাড়াদের নিয়েই রাজভবনে দেখা করতে যাচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কিন্তু মাঝপথে তাঁর গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। রাজ্যপালের অনুমতি নেওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁদের এভাবে আটকানো হল, সেই প্রশ্ন তুলে পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হন শুভেন্দু। শুক্রবার একই সুরে কথা বলতে শোনা গেল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে (C V Ananda Bose)। তাঁর কথায়, ''কিছু মানুষ হিংসা নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হলো না। এটা সংবিধান বিরোধী। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে বেশ কিছু খুনের ঘটনা সামনে এসেছে। আমি কিন্তু চুপ করে বসে থাকব ন। তাছাড়া আজ আদালতও বলেছে, যদি কেউ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চায়, তাহলে তাঁকে আটকানো যাবে না। যদি কেউ তা করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আশা করব, এটাই প্রথম আর এটাই শেষ। এর পর আর এমন হবে না।''
[আরও পড়ুন: শর্তসাপেক্ষে শুভেন্দুকে রাজভবন যাওয়ার অনুমতি হাই কোর্টের]
এর পরই রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ''সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপাল যদি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কিছু জানতে চান, তাহলে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকারের সেটা জানানো কর্তব্য। কিন্তু এখানে বারবার সেটা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সংবিধান মানা হচ্ছে না। সরকারের নিজের দায়িত্ব পালন করা উচিৎ। কিন্তু সরকার যদি সেই দায়িত্ব পালন করতে অপারগ হয়, তাহলে আইনও তার নিজের পথে চলবে। আমি রাজ্য সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, সংবিধান সবার উপরে।'' সিভি আনন্দ বোস আরও জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন। উত্তরের অপেক্ষায় থাকবেন, তবে তা এক সপ্তাহের বেশি নয়।''