অর্ণব আইচ: নিখুঁত পরিকল্পনা করেই শিক্ষিকার বাড়ি থেকে আট লক্ষ টাকার নগদ ও গয়না চুরি (Steal) করা হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সিসিটিভি ফুটেজ (CCTV footage) ধরিয়ে দিল ‘চোর’কে। নকল চাবি বানিয়ে বাড়ির ভিতর ঢুকেছিলেন শিক্ষিকার এক ছাত্রীর মা। নিখুঁত ছক কষে রীতিমতো পেশাদার চোরের মতো ওই মহিলাই টাকা ও গয়না হাতিয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু জানতেন না যে বাড়িতে রয়েছে সিসিটিভি। সেই সিসিটিভির ফুটেজেই কিনারা হল চুরির রহস্যের। একবালপুর থানার (Ekbalpur PS) পুলিশ বিবি তবস্সুম নামে অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার হয়েছে গয়না ও বেশিরভাগ টাকা।
পুলিশ জানিয়েছে, একবালপুরের ডেন্ট মিশন রোডে ঘটেছে এই ঘটনা। এখানকারই বাসিন্দা সাল্লা খাতুন নামে এক শিক্ষিকা। তাঁর বাড়িতে এক আত্মীয়ের বিয়ে ছিল। তাই বাড়ির আলমারিতে রাখা হয় টাকা ও গয়না। শিক্ষিকার বাড়িতে পড়তে আসে ছাত্রছাত্রীরা। রবিবার সকালে শিক্ষিকার মোবাইলে ফোন করেন এক ছাত্রীর মা। তাঁকে বাড়ির বাইরে বিশেষ প্রয়োজনে দেখা করতে বলেন। শিক্ষিকা বাড়িতে একাই ছিলেন। তাই বাড়ির দরজা ও গেটে তালা দিয়ে বের হন। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছে কারও দেখা পাননি।
[আরও পড়ুন: পাটনায় অনুষ্ঠান করতে গিয়ে ‘গণধর্ষণে’র শিকার যাদবপুরের সঞ্চালিকা, আড়াই মাস পরও অধরা অভিযুক্তরা]
বাড়ি ফিরে এসে সাল্লা খাতুন দেখেন, আলমারির দরজা খোলা। ভিতর থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে ২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা নগদ ও প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকার গয়না। তিনি একবালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর মধ্যেই ওই শিক্ষিকা তাঁর বাড়ির সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করতে থাকেন। তাতেই ধরা পড়ে যে, মুখ ঢেকে বাড়ির তালা খুলে ঢুকছেন এক মহিলা। কিন্তু এক সময় তাঁর মুখের কাপড় সরে যায়। তাতেই দেখা যায়, ওই মহিলা হচ্ছেন তাঁর ছাত্রীর মা বিবি তবস্সুম। তিনি পুলিশকে ফুটেজটি দেখান। পুলিশ নিশ্চিত হওয়ার পর বাঙালি শাহ ওয়ারশি রোডে তল্লাশি চালায়। গ্রেপ্তার হন ওই মহিলা।
[আরও পড়ুন: মোদি নাকি মমতা? চব্বিশে কাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান? জবাব দিলেন বাবুল]
তাকে গ্রেপ্তার করার পর বেশিরভাগ গয়না, ১ লক্ষ ৪২ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। জেরার মুখে ধৃত মহিলা জানান, মেয়ের পড়াশোনার সূত্র ধরে শিক্ষিকার বাড়িতে তবস্সুমের যাতায়াত ছিল। বিয়ে উপলক্ষে যে শিক্ষিকার বাড়িতে প্রচুর টাকা ও গয়না যে রয়েছে, তাও জানতে পারেন ওই মহিলা। রীতিমতো ছক কষেই গেট ও দরজার চাবির নকল তৈরি করেন। এদিন মহিলা শিক্ষিকাকে ফোন করে ডাকেন। সেই সুযোগে নিজেই নকল চাবি দিয়ে গেট ও দরজা খুলে ভিতরে ঢোকেন। নজর রেখেছিলেন, কোথায় আলমারির চাবি থাকে। নিখুঁত ছকে আলমারির লকার খুলে চুরি করেন টাকা ও গয়না। টাকা ও গয়নার উপর নজর থাকলেও তবস্সুম খেয়াল করেননি যে, বাড়িতে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিসিটিভির ক্যামেরা। এদিন মহিলাকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।